ওয়ার্ডপ্রেস ডেভেলপমেন্ট শুরু করতে চান?

index521

ওয়ার্ডপ্রেস নিয়ে যারা ডেভেলপমেন্ট শুরু করছে তারা প্রথম প্রথম খুবই আপসেট থাকে কিভাবে কি করবে। ওয়ার্ডপ্রেসের বিশাল ডকুমেন্টেশেন এবং স্কোপের কারনে সঠিক ভাবে একটা ওয়ার্কফ্লো ফলো করা কঠিন হয়ে যায় তাদের জন্য। এ বিষয়ে আমার সাজেশন হল একদম প্রাইমারী বিষয় থেকে শুরু করা। প্রথমেই প্লাগইন ডেভেলপমেন্টের দিকে না গিয়ে বা ফ্রিল্যান্স মার্কেটপ্লেসে থিম কাস্টোমাইজেশনের মত কাজ না নিয়ে বেসিক জিনিস গুলো ঝালাই করে নেয়া উচিত, যেমন

০. ওয়ার্ডপ্রেস অ্যাডমিন প্যানেল নিয়ে কিছু সময় কাটানো উচিত। কোনটা কোথায় আছে, কিভাবে ট্যাগ বা ক্যাটেগরী (সংক্ষেপে ট্যাক্সোনমি) যোগ করা যায় বা নতুন ইউজার তৈরী করা যায়, তাদের পারমিশন দেয়া যায়, কিভাবে মিডিয়া এলিমেন্ট আপলোড করা যায় এবং পোস্টে সেগুলো অ্যাটাচ করা যায় সেগুলো জানা দরকার। ওয়ার্ডপ্রেস ডেভেলপমেনটের আগে এটা অবশ্যকরণীয় – কারন আমরা যদি নাই জানি যে ডিফল্ট ভাবে ওয়ার্ডপ্রেসে কি কি দেয়া আছে, তাহলে কাজ করার সময় অযথা অনেক সময় নষ্ট হবে ওয়ার্কফ্লো বুঝতে বুঝতেই।

১. এরপর একটা সাধারণ থিম তৈরী করা উচিত একদম নিজে থেকে, ফ্রম স্ক্র‍্য্যাচ যাকে বলে। তাহলে ওয়ার্ডপ্রেসের কয়েকটা প্রয়োজনীয় জিনিস যেমন হুক (বিশেষ ভাবে অ্যাকশন হুক) , স্টাইলশিট এবং জাভাস্ক্রিপ্ট ফাইল এনকিউ করা এবং ওয়ার্ডপ্রেসের “লুপ” নিয়ে পরিষ্কার ধারণা পাওয়া যাবে।

২. এবার টেমপ্লেট ট্যাগ গুলো নিয়ে পড়াশোনা করা দরকার। কিভাবে একটা পোস্টের প্রয়োজনীয় এলিমেন্ট গুলোকে থিমের যেখানে ইচ্ছা যেভাবে ইচ্ছা প্রদর্শন করা যায়। এটা করার সময় ফিল্টার হুক সম্পর্কে প্রয়োজনীয় আইডিয়া পাওয়া যাবে। ওয়ার্ডপ্রেস ডেভেলপার হতে গেলে হুক সম্বন্ধে খুব ভালো ধারণা থাকা অতি প্রয়োজনীয়। টেমপ্লেট ট্যাগগুলোর সাথে ফিল্টার হুক নিয়ে এক্সপেরিমেন্ট করা প্রয়োজন। এই সময় মিডিয়া এলিমেন্ট সঠিক ভাবে দেখানোর ব্যাপারে, রিসাইজিং, থাম্বনেইল ইত্যাদি নিয়ে পড়াশোনা করা দরকার। 

৩. ওয়ার্ডপ্রেসের পেজ টেমপ্লেট একটি অত্যন্ত শক্তিশালী ফিচার। এর যথার্থ ব্যবহার ডেভেলপমেন্ট টাইম কে কমিয়ে দিতে পারে অনেকাংশেই। সেজন্য পেজ টেমপ্লেট কি এবং কিভাবে কাজ করে, কিভাবে পেজ টেমপ্লেট গুলো একই পেজকে বিভিন্ন রকম লুক-এন-ফিল দিতে সক্ষম সেটা বুঝতে হবে। এসময় আরেকটা জিনিস বোঝা দরকার – সেটা হল ওয়ার্ডপ্রেস পেজ এবং পোস্টের মাঝে পার্থক্য, এবং কিভাবে তারা একে অন্যের সাথে রিলেটেড সেটাও।

৪. এরপর প্লাগইন ডেভেলপমেন্ট নিয়ে পড়াশোনা করা দরকার। শুরু করা উচিত শর্টকোড দিয়ে কারন সেটা এক্সাইটিং, সহজ এবং মজার। শর্টকোড নিয়ে পড়াশোনা করার সময় কিভাবে আর্গুমেন্ট নিয়ে কাজ করা লাগে সেটা অবশ্যই জানা দরকার। নেস্টেড শর্টকোড থাকতে পারে, শর্টকোডের মাঝে কন্টেন্ট থাকতে পারে – সেগুলো কিভাবে প্রসেস করতে হয় তা জানতে হবে।

৫. প্লাগইন ডেভেলপমেন্টের অ্যাডভান্স পর্যায়ে নিজে নিজে কিছু প্লাগইন তৈরী করা দরকার। বিশেষ করে ফাইল আপলোড/স্টোরেজ (মিডিয়া গ্যালারী), প্লাগইনের মাঝে স্ক্রিপ্ট এবং স্টাইলশিট এনকিউ করা, ওয়ার্ডপ্রেসের ডিফল্ট ভিজ্যুয়াল এডিটরে নতুন বাটন লাগানো, সেগুলোর কলব্যাক প্রসেস করা এবং ইউজারের রোল ও পারমিশন নিয়ে বিস্তারিত পড়াশোনা করা দরকার।

৬. সবশেষে, এতক্ষন আমরা যা শিখলাম তা হল “ফাউন্ডেশন” সেটা বুঝতে পারা। আমরা যখন প্রজেক্টে কাজ করব তখন সবসময় মনে রাখা উচিত যে “ডোন্ট রি ইনভেন্ট দ্য হুইল”, সুতরাং কাজের সময় প্রয়োজন অনুযায়ী আমরা ওয়ার্ডপ্রেসের বিশাআআআল রিপোজিটরীতে থার্ড পার্টি ডেভেলপারদের তৈরী করে রাখা প্লাগইন গুলো ব্যবহার করার চেষ্টা করব। লাগলে সেগুলো কাস্টোমাইজ করে নিব, তাতে না হলে নিজে ডেভেলপ করব। কিন্তু সবার আগে চেষ্টা করব যেসব জিনিশ অলরেডী অ্যাভাইলেবল আছে সেগুলো নিয়ে কাজ করার। তাতে সময় ও পরিশ্রম দুই বাঁচবে অনেকাংশে, টেনশনও কমবে। এছাড়া থিম তৈরী শুরু করার সময় একটা বয়লারপ্লেট থিম ব্যবহার করলে প্রাথমিক অনেক মাথাব্যাথা থেকে রেহাই পাওয়া যায় – এই ব্যাপারে আমার পছন্দ আন্ডারস্কোর বয়লারপ্লেট থিম।

৭. নিয়মিত ওয়ার্ডপ্রেস নিয়ে পড়াশোনা করা লাগবে। ডাব্লিউ পি টিউটস (নেটটিউটস), ওয়ার্ডপ্রেস বিগিনার, ডিগিং ইনটু ওয়ার্ডপ্রেস ইত্যাদি চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করে রাখা উচিত এবং তাদের আপডেটগুলো ফলো করা দরকার। বিভিন্ন সময় অন্যদের তৈরী করা প্লাগইন নামিয়ে সেগুলোর কোড দেখা উচিত যাতে নিজের জ্ঞান সমৃদ্ধ হয়, প্রয়োজনের সময় যাতে সেটার প্রয়োগ করা যায়। পরিশেষে মনে রাখা উচিত সেই ছোটবেলায় শেখা “পূঁথিগত বিদ্যা আর পরহস্তে ধন, নাহি বিদ্যা নাহি ধন হলে প্রয়োজন”। আপনার শিক্ষার ব্যবহারিক প্রয়োগ ঘটান, একজন সফল ওয়ার্ডপ্রেস ডেভেলপার হিসেবে নিজেকে তৈরী করে ফেলুন

Leave a Reply