আপনার দুশমন যখন ডায়েটিং

102

শরীরের মেদ কমাতে আমরা প্রতিদিন কত না কিছু করে থাকি। যেমন- ডায়েটিং, ব্যায়াম ইত্যাদি। এটি করতে গিয়ে আপনি মিষ্টি খাচ্ছেন না, রাতে ঘুমোচ্ছেও কয়েক ঘণ্টা, প্রাণপণ জিম করছে, কিন্তু তাও যেন দিনের শেষে কেমন ঝিমিয়ে পড়ছে। কিন্তু কি করবেন, কীভাবে এড়াবেন এ সমস্যা। তার জন্য খেয়াল রাখুন কয়েকটি বিষয়।

১) ঘণ্টার পর ঘণ্টা না খেয়ে থাকলে আপনার ব্লাড সুগার লেবেল কমতে থাকবে। আর শরীরকে ঠিকঠাক এনার্জি দেওয়ার জন্য গ্লুকোজ লেভেল ঠিক রাখাটাও দরকার। অতএব সমীকরণটা নিজেই বুঝে নিন৷রক্তে গ্লুকোজ লেভেল কমে গেলে শুধু যে ক্লান্ত লাগবে তা-ই নয়, মেজাজটাও যাবে বিগড়ে, আর সবসময় খাই-খাই মানসিকতা আপনাকে তাড়া করে বেড়াবে। তাই অল্প অল্প করে বারে বারে খান। এছাড়া লাঞ্চ বা ডিনারের পর হাল্কা ফল খান।

২) সকালের নাস্তায় আমরা মাফিন, প্যানকেক, টোস্ট, ডোনাট খেতে ভালোবাসি। এগুলোয় প্রচুর শর্করা থাকলেও, প্রয়োজনীয় ফাইবারের ঘাটতি থেকে যায়। কিন্তু এগুলো বাদ দিয়ে ফাইবারযুক্ত হোল গ্রেন ফুড (আটার রুটি, কর্নফ্লেক্স, ওটস) দিয়ে দিনটা শুরু করেন, তাহলে শরীরে পুষ্টি উপাদানগুলো এক্কেবারে ব্যালেন্সড থাকে। আপনিও সব কাজে এক্সট্রা এনার্জি পাবেন।

৩) ডায়েটে প্রয়োজনীয় শাকসবজি রাখুন। তবে বেশি খেয়ে পেটের গোলমাল বাঁধাবেন না। ব্রকোলি, ফুলকপি, পালংশাক প্রভৃতি শাকসব্জিতে ভিটামিন এ, সি, ফাইবার, প্রোটিন, ক্যালসিয়াম প্রায় সবই থাকে। তাই ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে এগুলো রান্না করুন বাড়িতে। পালংপনির বা ফুলকপির ডালনা রোজ আপনাকে খেতে হবে না। কিন্তু রোস্টেড বা বয়েলড ভেজিটেবলসও শরীরকে তরতাজা রাখতে দারুণ উপকারী।

৪) মহিলাদের মধ্যে অনেকেই রক্তাল্পতায় ভোগেন। আর বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই কারণটা শরীরে আয়রনের ঘাটতি। আর আয়রন ডেফিসিয়েন্সির প্রথম লক্ষণই হল অল্পেতে ক্লান্ত হয়ে পড়া। তাই থোড়, মোচা, সয়াবিন, রেড মীট রাখুন আপনার কাঁচা বাজারের তালিকায়। অল্পেতেই হাঁপিয়ে উঠবেন না।

৫) অনেকেই আমরা ইন্টারনেট দেখে বা অমুকের ডায়েট চার্ট ফলো করে কর্বোহাইড্রেট কমিয়ে ফেলি, তাড়াতাড়ি রোগা হওয়ার জন্য। কিন্তু পরীক্ষা বলছে, সুষম ডায়েটে ৫০ শতাংশ কমপ্লেক্স কার্বোহাইড্রেট থাকা উচিত। কারণ এগুলো খুব তাড়াতাড়ি হজম হয়ে শরীরে এনার্জি দেয়।

৬) আমরা অনেকেই জানি না, অনেক সময় ফুড অ্যালার্জি থেকেও এনার্জি কমে যায়। কারণ যেসব খাবারে আপনার অ্যালার্জি সেগুলো ভুলে খেয়ে নিলে শরীরে প্রয়োজনীয় পুষ্টি সরবারহ ব্যাহত হয়। ফলে আপনাকে চেপে ধরে ক্লান্তির সঙ্গে অন্য অনেক সমস্যা।

৭) কাজে এনার্জি পেতে অতিরিক্ত কফি খেলে খানিকক্ষণ পর থেকেই ভিতরে ভিতরে আমরা ক্লান্ত হয়ে পড়ি। তবে আদতে ব্যাপারটা আমরা সবসময় খেয়াল করি না। ক্যাফিন বা অন্যান্য কিছু এনার্জি ড্রিঙ্ক সাময়িকভাবে আপনাকে তরতাজা রাখলেও দিনভর রাখতে পারবে না। আর আপনিও বুঝতে পারবেন না কেন এত এত কাপ এনার্জি ড্রিঙ্ক খেয়েও রাতদিন আপনি ক্লান্তিতে ভুগছেন!

Leave a Reply