দাঁত ক্ষয় নিয়ে কিছু কথা

115

আমরা জানি চিনি /মিষ্টির কারণে দাঁতের ক্ষয় হয়। তবে এর পেছনের কারণটা নিয়ে নতুন মতবাদ সৃষ্টি হয়েছে। চিনি / মিষ্টি খেলে দাঁতে ব্যাকটেরিয়া আক্রমণ করে, অ্যাসিড উৎপন্ন করে যা দাঁত ক্ষয়ের কারণ-এমনটাই আমরা জেনে এসেছি।

ড. ওয়েস্টন প্রাইস-এর গবেষণা অনুযায়ী, এবং আরও অনেক বিশেষজ্ঞদের মতে দাঁত ক্ষয়ের কারণ প্রধানত তিনটি-

০১- খাবারে যথেষ্ট মিনারেল না থাকা।

০২- খাবারে যথেষ্ট ফ্যাট সল্যুবল ভিটামিন (ভিটামিন এ, ডি, ই এবং কে) না থাকা।

০৩- আপনার পরিপাকতন্ত্রের শোষণ করার মতো যথেষ্ট পুষ্টি না থাকা। ফাইটিক অ্যাসিড এক্ষেত্রে একটা বড় ভূমিকা রাখে।

একটা দীর্ঘ সময় ধরে আপনার খাবারে যদি ভিটামিন ও মিনারেল খুব কম থাকে বা একেবারেই না থাকে, কিংবা আপনার খাবারে যদি উচ্চমাত্রার ফাইটিক অ্যাসিডের পরিমাণ থাকে (শস্য, বীজ, বাদাম ইত্যাদি ধরনের খাবারে এই অ্যাসিড থাকে), তাহলে আপনার রক্তের ক্রিয়া-বিক্রিয়া ও ক্যালসিয়াম-ফসফরাসের অনুপাত ভারসাম্য হারাবে। যার ফলে আপনার শরীর আপনার হাড়, দাঁত ইত্যাদি থেকে মিনারেল গ্রহণ করতে শুরু করবে, ফলে আপনার দাঁত ও হাড় ক্ষয় হতে থাকবে।

চিনি / মিষ্টি শরীরের পুষ্টি উপাদান নিঃশেষ করে, এটাই চিনি / মিষ্টির জন্য দাঁত ক্ষয়ের কারণ। কিন্তু দাঁত বাঁচাতে শুধু মিষ্টি খাওয়া কমিয়ে দিলেই চলবেনা, বরং আমাদের ভিটামিন ও মিনারেল সমৃদ্ধ প্রচুর খাবার খেতে হবে যা আমাদের দাঁতকে সুরক্ষা করবে। আসুন জেনে নিই দাঁতের সুরক্ষায় আমরা কী করতে পারি।

যেসব খাবারের ওপর প্রাধান্য দিতে হবে-

১- নারিকেল, দুগ্ধজাত খাবার (যেমন- মাখন, পনির)।

২- তৃণভোজী প্রাণীর মাংস (আমাদের দেশে আমরা এটাই খাই), হাড়যুক্ত মাংস, কলিজা।

৩- সামুদ্রিক খাবার।

৪- শাকসবজি।

খেয়াল রাখতে হবে, আপনার খাদ্যে শিম, বাদাম, ডাল ইত্যাদি কী পরিমাণে আছে। এসব খাবারে ফাইটিক অ্যাসিড থাকে। এসব খাবেন না, তা নয়, পরিমিত ও প্রয়োজন অনুযায়ী খাবেন। প্রসেসড খাবার যেগুলোতে প্রচুর চিনি ও ময়দা আছে, সেসব খাবার যত কম খাওয়া যায়, তত দাঁতের জন্য ভালো।

সাপ্লিমেন্ট হিসেবে যা খেতে পারেন-

০১- কড লিভার অয়েল। এতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ, ডি এবং কে আছে।

০২- ম্যাগনেসিয়াম সমৃদ্ধ খাবার। ম্যাগনেসিয়াম ক্যালসিয়াম ও ফসফরাসের কার্যক্ষমতা বাড়ায়।

০৩- জিলাটিন- যদি হাড়সমৃদ্ধ খাবার খেতে না পারেন, জিলাটিন খেতে পারেন অল্টারনেটিভ হিসেবে। এটি মাড়ি ও পরিপাকের জন্য উপকারী।

সবার আগে একবার আপনার ডাক্তারের সাথে আলোচনা করে নিন। আপনি ফিরে পান মুক্তোঝরা হাসি।

Leave a Reply