যে ১০টি কারনে আপনার Android কে ROOT করবেন

Android কে ROOT

রুট কোন প্রকার অ্যাপ অথবা সফটওয়্যার নয়। এটি জাস্ট একটা পারমিট যা আপনাকে আপনার ডিভাইস/সিস্টেম এর সম্পূর্ণ কন্ট্রোল দিবে। যদি অল্প কথায় বলি রুট ব্যাপার টি হচ্ছে আপনার প্রিয় ডিভাইসটির অ্যাডমিন প্রিভিলেজ হ্যাক করা। হ্যাঁ, শব্দটি হ্যাক এবং রুট এর মাধ্যমে আপনি আপনি আপনার ডিভাইসটির মূল কন্ট্রোল হ্যাক করতে চলেছেন। আপনি যখন বাজার থেকে আনকোরা নতুন সেটটি কিনে আনেন তখন ব্যাপার টা এরকম থাকে যে আপনার ইউজার প্রিভিলেজ হচ্ছে গেসট ইউজার এর মত। আপনি সবকিছুই করতে পারবেন কিন্তু সিস্টেম ফাইল মডিফাই করতে পারবেন না।

 তাহলে আসুন দেখি ১০ টি কারন যার জন্যে আপনি আপনার ডিভাইস টি রুট করবেন।

১- রুট এক্সেস পাওয়া ঃ আপনার এন্ড্রয়েড ডিভাইস টি রুট করলে আপনি আপনার ডিভাইস এর এডমিন এক্সেস পাবেন যাকে এন্ড্রয়েড এর ভাষায় রুট এক্সেস বলে অনেকে। এই এক্সেস টি আপনি রুট না করলে পাবেন না। এই এক্সেস এর সাহায্যে আপনি অনেক কিছু করতে পারবেন এবং পেতে হলে অবশ্যই আপনাকে আপনার ডিভাইস টি রুট করতেই হবে মাস্ট।

২- ইচ্ছামত অ্যাপ/সিস্টেম অ্যাপস রিমুভঃ রুট করার ফলে আপনি এডমিন এক্সেস পাচ্ছেন মানে আপনার ডিভাইস এ আপনার সম্পূর্ণ কন্ট্রোল এসেছে। এখন আপনি ইচ্ছামত আপনার ডিভাইস এর অ্যাপ/সিস্টেম অ্যাপস রিমুভ করতে পারবেন। যেমন স্টক সিস্টেম এর সাথে অনেক অ্যাপ আসে যা আমাদের ভালো লাগেনা ইউজ করতে অথবা ওগুলো কখন ও ইউজ করিনা। তো যেটা ইউজ করিনা সেটা রেখে লাভ কি? রুট করলে আপনি সেই অ্যাপস গুলো রিমুভ করতে পারবেন অথবা ফোন মেমোরি থেকে এসডি কার্ড এ মুভ করতে পারবেন যা আপনি নরমালি পারবেন না। এতে করে আপনার ডিভাইস এর ইন্টারনাল মেমোরি ও RAM বাড়বে। আর এই দুইটা বাড়ানো মানে ডিভাইস এর স্পীড বাড়ানো।

৩- ডিভাইস এর ফুল ব্যাকআপ নিনঃ ডাটা আমাদের অনেক ইম্পরট্যান্ট। আর সে জন্যে অনেক সময় আমাদের মোবাইল অথবা ট্যাব এর ডাটা ব্যাকআপ করা লাগে। নরমালি দেখা যায় একসাথে সব ব্যাকআপ করা যায় না অথবা গেলেও অনেক কিছু মিসিং থাকে। কারন আপনার ডিভাইস এর এডমিন এক্সেস আপনার নেই। আর এডমিন এক্সেস পেতে হলে আপনার রুট করতে হবে। আর রুট করলে আপনি আপনার ডিভাইস এর অ্যাপস ডাটা থেকে শুরু করে সম্পূর্ণ রম ব্যাকআপ করতে পারবেন। আমরা প্লে ষ্টোর এ একটা অ্যাপ দেখেছি Titanium Backup নামক যা ব্যাকআপ এর জন্যে সবচেয়ে ফেমাস এবং এটি ব্যাবহারে আপনার রুট এক্সেস লাগবে।

৪- ডিভাইস এর বাহ্যিক সৌন্দর্যঃ এই কথাটি দ্বারা আমি আপনার ডিভাইস এর কাভার,কেসিং,রঙ বুঝাই নি। এই সৌন্দর্যের মানে আপনার ডিভাইস এর সিস্টেম এর সৌন্দর্য বাড়ানো। রুট করলে আপনি অনেক কিছু এডিট,কাস্টমাইজ করতে পারবেন যাতে করে নরমাল ডিভাইস এর চেয়ে আপনার ডিভাইস টি থাকবে এক ধাপ এগিয়ে।

৫- পিক্সেল ডেনসিটি পরিবর্তনঃ রুট করার মাধ্যমে আপনি আপনার ডিভাইস এর ইউজার ইন্টারফেস চেঞ্জ করতে পারবেন। স্মার্টফোন মানেই অনেক স্মার্ট ফিচার তার ভিতরে থাকা। তবে স্ক্রিন সাইজ ছোট হউয়ার কারনে অনেক কিছু করতে অথবা দেখতে আমাদের সমস্যা হয়। তাই পিক্সেল ডেনসিটি এর পরিবর্তনের মাধ্যমে ইন্টারনালি আপনার ডিভাইস এর স্ক্রিন সাইজ বাড়িয়ে নিতে পারেন যা আপনাকে দিবে এক অন্য রকম অভিজ্ঞতা।

এই ৫ টি হল নরমাল কিছু পয়েন্ট। আসুন দেখি আরও ৫ টি এডভান্স লেভেল এর পয়েন্ট।

৬- রুট কার্নেল এর ব্যাবহার ও পারফর্মেন্স ইমপ্রুভমেন্টঃ এই পয়েন্ট টি আমরা অনেকেই শুনেছি তবে আসলে সম্পূর্ণ টা জানিনা। অনেক অ্যাপ আছে যা আপনার ডিভাইস এর ভিবিন্য ফাইল মডিফাই করে আপনার ডিভাইস এর স্পীড ও পারফর্মেন্স একধাপ বাড়াবে। এখন বলবেন এটা কি আপনার ডিভাইস এর মেমোরি,RAM,প্রসেসর ইত্যাদি বাড়াবে?  নাহ… এটি আপনার হার্ডওয়্যার এর পরিবর্তন করতে পারবে না। তবে ফার্মওয়্যার এ পরিবর্তন ও অপটিমাইজ করে স্পীড বাড়াতে পারবে। এখন আসি রুট কার্নেল নিয়ে। রুট কার্নেল এর সাহায্যে আপনি আপনার ডিভাইস এর প্রসেসর ক্লক স্পীড ও হার্ডওয়্যার এর ব্যাবহার মডিফাই করতে পারবেন। এই কাস্টম কার্নেল এর সাহায্যে আপনি আপনার ডিভাইস এর পারফর্মেন্স বাড়াতে পারবেন তবে আপনাকে এডভান্স লেভেল এর ইউজার হতে হবে। আজ রুট করলেন আর কালই এটা নিয়ে ট্রাই করলেন তাহলে হবেনা। আগে আরও অনেক কিছু নিয়ে জানতে হবে।

৭- কাস্টম রম ও রম মডিফাইঃ রম অথবা ফার্মওয়্যার সিস্টেম যা ডিফল্ট ভাবে আপনার ডিভাইস এর সাথে এসেছে তা আমরা অনেক সময় মডিফাই করতে চাই। অথবা দেখা যায় এটি আমার ভালো লাগতেছেনা। ভালো না লাগলে আর কি করার পরিবর্তন করার ও কোন উপায় নেই তো নতুন মোবাইল কিনতে হবে। কিন্তু না… রুট করলে আপনি আপনার ডিভাইস এর ডিফল্ট সিস্টেম অথবা রম এ পরিবর্তন করতে পারবেন ইচ্ছা মতো। অনেক ফিচার এড করতে পারবেন যা নরমালি আপনার ডিভাইস এ পাবেন না। এছাড়াও সম্পূর্ণ সিস্টেম পরিবর্তন করতে পারবেন যা কাস্টম রম নামে পরিচিত। যেমন আমি প্রতি সপ্তাহে আমার মোবাইল এর রম চেঞ্জ করি এবং ভিবন্য রম এর স্বাদ নেই। এটি শুধুমাত্র সম্ভব রুট করলেই। এমন ও দেখা যায় আপনার মোবাইল এ কিছু একটা ফিচার নেই যা দামি একটি ডিভাইস এ আছে। কাস্টম রম ব্যাবহার এর ফলে আপনি ওই ফিচার টি ইউজ ও করতে পারেন।

৮- আলাদা অ্যাপ ইন্সটল ও ব্যাবহারঃ রুট করলে আপনি আলাদা কিছু অ্যাপ ইন্সটল করতে পারবেন যা নরমালি আপনি ইন্সটল করতে পারবেন না। এছাড়াও নরমাল ভাবে অনেক অ্যাপ এ অনেক কাজ করতে পারেনা এবং করতে রুট এক্সেস চায়। যেমন ধরুন- টাস্ক কিলার অ্যাপ। নরমাল ইউজার রা এই টাইপের অ্যাপ ইউজ করে আবার রুট ইউজার রাও করে। সেইম অ্যাপ ইউজ করে রুট ইউজার বেশি সুবিধা পায় কারন ওই অ্যাপ টি এডমিন পারমিশন পায় যার ফলে সিস্টেম ও হিডেন কিছু টাস্ক কিল করতে পারে যাতে করলে আপনার ডিভাইস এর স্পীড বাড়ছে।

৯- ইন্টারনাল Storage বাড়ানোঃ যাদের ফোনে ইন্টারনাল মেমোরি কম তারা চাইলে রুট করার মাধ্যমে যেকোনো অ্যাপ্লিকেশান SD কাের্ড ট্রান্সফার করে নিতে পারবেন। কিন্তু এই কাজটির জন্য রুট করা আবশ্যক। কিছু কিছু অ্যাপ্লিকেশান Storage ট্রান্সফার করার ক্ষেত্রে স্বাধীনতা দিলেও অনেক অ্যাপস আছে যেগুলো রুট করা ছাড়া ট্রান্সফার একরকম অসম্ভব। যেমন আপনি চাইছেন আপনার সেটে জেলিবিন আপডেট করবেন কিন্তু তার জন্য আপনি সেটের ডাটা ব্যাকআপ নিতে চাইছেন। এখন আপনি যদি ব্যাকাপ নেবার জন্য কোন বিশেষ অ্যাপস ইন্সটল করতে চান তার জন্য অবশ্যই আপনার সেটটিকে রুট করে নিতে হবে।

১০- ডিভাইস এর মূল মালিকঃ রুট করা মানে আপনি আপনার ডিভাইস এর প্রকৃত মালিক হলেন। কারন রুট করার আগ মুহূর্ত পর্যন্ত আপনি আপনার ডিভাইস এর এডমিন না। এডমিন হল আপনার মোবাইল এর কোম্পানি এবং তাদের দেয়া ফার্মওয়্যার। তাদের দেয়া সিস্টেম এ যা যা জেভাবে আছে আপনাকে সেইভাবেই ডিভাইস টি ইউজ করতে হবে। কিন্তু আমি যেহেতু মালিক সুতরাং আমি আমার মোবাইল ইচ্ছামত ইউজ করবো তাহলে রুট আপনাকে করতে হবেই। রুট করার মাধ্যমে আপনি আপনার ডিভাইস এর সর্বোচ্চ কন্ট্রোল এক্সেস পাবেন যার সাহায্যে আপনি অনেক কিছুই করতে পারবেন। যেমন ধরুন আপনি সনি ইউজ করছেন। কিন্তু Samsung এর ফিচার ও স্টাইল গুলো ভালো লাগে। তাহলে আপনি আপনার ডিভাইস এর ইন্টারফেস ও ফিচার সেরকম করে পরিবর্তন করে নিতে পারবেন।

এই ১০ টি হল পয়েন্ট টু রুট। এখন এই ১০ টি পয়েন্ট এর ভিতর আরও হাজার হাজার পয়েন্ট ও ফিচার আছে যা আপনি পাবেন একমাত্র রুট করলেই। আমি মনে করি রুট করা ছাড়া এন্ড্রয়েড ইউজ করেন তারা ৫ বছর আগের জাভা ইউজ করা একই কথা।

Leave a Reply