৭ দিনে কলার খোসায় কি দাঁত সাদা ঝকঝকে করা সম্ভব?

অতীতে তো ডাক্তার ছিল না। আর ছিল না নামি প্রসাধন প্রতিষ্ঠানের টুথপেস্ট-পাউডার-ব্রাশ! তাহলে, তখন মানুষের দাঁত কি থাকত হলদেটে আর দাগে ভরা? মোটেই না। মানুষের কাছে তখন ছিল হরেক রকম ঘরোয়া টিপস। আর তেমনই একটা হচ্ছে কলার খোসা দিয়ে দাঁত সাদা করা।

ভাবছেন এও কি সম্ভব? এটা অসম্ভব নয়৷ আর মিথ্যাও নয়। কলার খোসা সত্যিকার অর্থেই বিজ্ঞানসম্মতভাবে আপনার দাঁত সাদা ঝকঝকে করে তুলতে পারে৷ এবার ভুলে যান দাঁতের ডাক্তারের কাছে কাঁড়ি কাঁড়ি টাকা খরচ করার ভাবনা৷ ঘরে বসেই নিজের দাঁতকে করুন ঝকঝকে। তবে হ্যাঁ, কাজটা করতে হবে সঠিক পদ্ধতিতে।

কলার খোসায় আছে প্রচুর পরিমাণে খনিজ উপাদান। বিশেষ করে পটাসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম আর ম্যাঙ্গানিজ। আর এরাই হচ্ছে দাঁতকে সাদা করে তোলার প্রধান হাতিয়ার। এছাড়াও, কলার খোসায় আছে প্রচুর ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন ডি, যা কিনা দাঁতকে মজবুত করে তোলার পাশাপাশি খনিজ উপাদানগুলিকে শোষণ করতেও সহায়তা করে।

প্রথমেই বেছে নিন সঠিক কলা। দাঁত সাদা করার জন্য ঠিকভাবে পাকা কলা হওয়া জরুরি। খুব বেশি পাকাও নয়, খুব বেশি কাঁচাও নয়। এমন কলা বেছে নিন যারা কিনা এখন নিচের দিকে একটু একটু সবুজ। কেননা এই ধরনের কলায় পটাশিয়াম থাকে উচ্চ মাত্রায়। আর এই পটাশিয়ামই দাঁত সাদা করার দায়িত্ব নেবে।

কলা উলটো করে খোসা ছাড়িয়ে নিন। দেখবেন যে কলার গায়ে লম্বা লম্বা সুতার মতন আঁশ থাকে। উলটো করে খোসা ছাড়াতে এই আঁশ গুলো থাকবে খোসার সঙ্গেই৷
খোসা থেকে চারকোনা করে দু’’টো টুকরো কেটে নিন। আপনার সুবিধা মতন আকারেই কেটে নিন। চাইলে এই কাটা খোসা ফ্রিজেও সংরক্ষণ করতে পারেন।

এবার সকালে দাঁত ব্রাশ করার আগে এই কলার খোসার ভেতরের অংশটি দিয়ে আপনার দাঁত খুব ভাল করে ঘষুন। প্রথম টুকরোটি দিয়ে পুরো এক মিনিট ঘষুন। তারপর সেটা বদলে দ্বিতীয় টুকরোটি দিয়ে আরও এক মিনিট। অর্থাৎ পুরো দুই মিনিট দাঁতকে ঘষুন। দাঁতের প্রত্যেকটি অংশে যেন পৌছায় এমন ভাবে ঘষতে হবে।

দাঁত ঘষা হলে কিছুক্ষণ অপেক্ষা করুন। ১৫ থেকে ২০ মিনিট করতে পারলে ভালো। এই সময়ে জল বা অন্য কিছু খাবেন না৷ কিংবা কুলিকুচিও করবেন না। সময়টা পেরিয়ে গেলে আপনার নিয়মিত ব্যবহারের টুথ পেস্ট দিয়ে দাঁত মেজে নিন।

এবার আয়নায় তাকিয়ে দেখুন! দাঁত একটু বেশি পরিষ্কার লাগছে? ৪/৫ দিন এমন করার পরেই দেখবেন আগের চাইতে অনেক বেশি উজ্জ্বল হয়ে উঠেছে আপনার দাঁত। হলদে ভাব যেমন কমে গিয়েছে, তেমনি কালো ছোপটাও অনেকটাই সরে গেছে। যারা ধূমপান বা মদ্যপান করেন, তাদের ক্ষেত্রেও কাজ করবে এই পদ্ধতি। তবে ব্যবহার করতে হবে বেশ দীর্ঘদিন। এবং সঠিক নিয়ম মেনে।

অবশ্যই মনে রাখতে হবে

১। এটা কোনও ম্যাজিক নয়। তাই ভালো ফল পেতে নিয়ম মেনে ব্যবহার করতে হবে।

২। অবশ্যই কমপক্ষে ২ মিনিট ঘষতে হবে। এই সময়টা জরুরি। বেশি ঘষলে আরও ভালো।

৩। ঘষার পর অবশ্যই সময় দিতে হবে খনিজগুলি দাঁতে শোষিত হওয়ার৷

৪। যাদের দাঁত মদ্যপান, ধূমপান বা অসুস্থতার কারণে হলুদ তাদের ক্ষেত্রে একটু সময় লাগবে।

৫। কলার খোসায় প্রচুর পরিমাণে শর্করা থাকে। তাই অবশ্যই দাঁত খুব ভালভাবে মেজে নিতে হবে। এই কারণেই দিনে একবারের বেশি ব্যবহার করা যাবে না।

৬। যাদের দাঁত খুব একটা বেশি হলুদ নয়, তারা সপ্তাহে একবার ব্যবহার করুন।

Leave a Reply