এই আর্টিকেলটি লিখেছেনঃ তারছিড়া তামিম
যখন আপনি একটি আর্টিকেল বা পোস্ট লিখবেন তখন আপনার লক্ষ্য থাকবে সেই লিখাকে সবার কাছে গ্রহণযোগ্য করে তোলা। আর সেই জন্য মানতে হবে নির্দিষ্ট কিছু পদ্ধতি। সেই পদ্ধতিগুলো সম্পর্কে জানুন এখানে আর ভালো লাগলে সকলের সাথে শেয়ার করুন। 🙂
প্রথমে আপনি কুশল বিনিময় করুন, যেমন এখন আমি করবোঃ-
সবাই ভালো আছেন এবং সর্বদাই ভালো থাকবেন এই প্রত্যাশাই করি। আমি নিজেও আলহামদুলিল্লাহ্ ভালো আছি। ঠিক এভাবে যেন ভালো থেকে প্রতি মুহূর্ত আপনাদের সাথে থাকতে পারি আশা করি সকলে আমার জন্য সেই দোয়াই করবেন।
এবার ছোট করে আপনার পোষ্টের বিষয় সম্পর্কে কিছু বলুন এবং শুরু করুনঃ-
দেখুন আমরা যারা ব্লগিং করি তারা সবাই চাই যে আমাদের এতো কষ্ট করে লেখাটি যেন মানুষ পড়ে বুঝতে পারে, তাদের যেন ভালো লাগে। কারণ এই যে আমরা ব্লগিং করছি বাংলাতে তাতে আমাদের কি লাভ হচ্ছে? আমাদের কি কোন টাকা-পয়সা আসছে? অবশ্যই না।
![letter_writi_24714_md](http://bloggertamim.files.wordpress.com/2012/11/letter_writi_24714_md.gif?w=560)
তাহলে আমরা কেন করছি? আমরা করছি আমাদের বাংলা ভাষাটাকে ভার্চুয়ালে ছড়িয়ে দিতে। আমরা স্বপ্ন দেখি একদিন “How to I repair my mobile?” লিখে সার্চ দিতে হবে না, আমরা সার্চ দেবো “কিভাবে আমি আমার মোবাইলটি ঠিক করতে পারি?” লিখে এবং সাথে, সাথে নিজের ভাষায় তার সমাধান পাবো ইনশাল্লাহ। 😀
আর সেই লেখাটিই যদি কিছু সিম্পল ট্রিক্স এর কারণে গোছালো না হয়, সম্পূর্ণ ভাব বুঝতে না পারা যায় তবে কেমন লাগবে? 🙁 তাই এখন আমি আমার জানা কিছু ট্রিক্স আপনাদের সাথে শেয়ার করবো, যেন আপনার পোষ্টটি অন্তত সবার কাছে গ্রহণযোগ্যতা পায়। তবে চলুন শুরু করিঃ-
১/ আপনার নিজের জন্য একটি স্টাইল তৈরি করুনঃ-
![escher_hands](http://bloggertamim.files.wordpress.com/2012/11/escher_hands.jpg?w=560)
সবাই হয়তো পোষ্টের শুরুতে সালাম দিচ্ছে ইত্যাদি করছে। আপনি অন্য কিছু করুন। যা সাধারণত করা হয়ে থাকে না। এতে মানুষ আপনার লেখাটির মাঝে অন্য রকম স্বাদ পাবে। কারণ তারা এরকম আগে দেখেনি এবং তাই কিছু জানেও না। তাই তারা বের হয়ে যাবে না, বরং সম্পূর্ণ পোষ্টটি পড়ে নতুন কিছু জানতে চেষ্টা করবে।
২/ প্যারাগ্রাফঃ-
লেখার মাঝে প্রয়োজনে অবশ্যই প্যারাগ্রাফ দেবেন। ধরুন আপনি গরু রচনা লিখতে যাচ্ছেন। এখন যদি আপনি গরু রচনার ভুমিকা, পরিচিতি , বৈশিষ্ট্য এক সাথে হিজিবিজি করে ধুমিয়ে লিখে যান তবে পড়তে, বুঝতে অবশ্যই কষ্ট হবে এবং যে পড়ছে একসময় সে না পড়েই চলে যাবে।
![BS00979_](http://bloggertamim.files.wordpress.com/2012/11/bs00979_.gif?w=560)
☼ ধরুন আপনি লিখছেনঃ- গরু একটি গৃহপালিত পশু। এরা মাঠে চড়ে ঘাস খায়, আবার বাড়িতে ভুষি , খৈল দিলে না করে না। গাভী আমাদের দুধ দেয়। গাভীর দুধ একটি সুষম জাতীয় খাদ্য। যা দেহের জন্য অত্যন্ত উপকারি!!
![white-cartoon-cow](http://bloggertamim.files.wordpress.com/2012/11/white-cartoon-cow.jpg?w=560&h=461)
এখন আপনি যদি এভাবে না লিখে একটু প্যারাগ্রাফ আঁকারে লেখেন তবে কোনটা বেশি ভালো দেখায়? ঠিক এভাবে- 😉
- পরিচিতিঃ গরু একটি গৃহপালিত পশু।
- এদের খাদ্যঃ রা মাঠে চড়ে ঘাস খায়, আবার বাড়িতে ভুষি , খৈল দিলে না করে না।
- এরা আমাদের দেয়ঃ গাভী আমাদের দুধ দেয়। গাভীর দুধ একটি সুষম জাতীয় খাদ্য। যা দেহের জন্য অত্যন্ত উপকারি!!
৩/ রিভিশন দিন এবং রিরাইট করুনঃ-
![writing](http://bloggertamim.files.wordpress.com/2012/11/writing.png?w=350&h=350)
আপনি তো আর কম্পিউটার না। আপনি হচ্ছেন মানুষ। তাই কিছু করতে গেলে, কিছু লিখতে গেলে কোন পয়েন্ট বাদ যেতেই পারে, কোন ভুল হতেই পারে। তাই কিছু লেখার পরে তা আবার সময় করে একটু দেখে নিয়ে ভুল গুলো ঠিক করে পোষ্টটি পাবলিশ করুন।
৪/ অনাবশ্যক শব্দ বর্জন করুনঃ-
একটি পোষ্ট প্রয়োজন হলে ছোট্ট করে লিখুন, তারপরেও অপ্রয়োজনীয় শব্দ দিয়ে পোষ্ট বড় করে মানুষের সময় নষ্ট করবেন না। এতে ভিজিটর বিরক্ত হয়। ধরুন আপনাদের এলাকার কলেজ মাঠে আগামীকাল ক্রিকেট খেলা হবে। এখন একজন জিজ্ঞেস করলো খেলা কোথায় হবে? আপনি বললেন “আমি বাঁজার দিয়ে আসার সময় দেখি কলেজ ক্রিকেট কমিটির পক্ষ থেকে তার সদস্যরা রিক্কক্সায় করে এলাকায় ঘুরে, ঘুরে মাইক দিয়ে বলছে যে আগামীকাল কলেজ মাঠেই ক্রিকেট খেলা হবে” 😛
![content_writing_editing_tips-300x244](http://bloggertamim.files.wordpress.com/2012/11/content_writing_editing_tips-300x244.png?w=560)
এখন আপনিই বলুন মানুষ বিরক্ত না হয়ে কোথায় যাবে? আপনি এক কথায় “কলেজ মাঠে” বলে দিলেই তো হতো। যেই লাউ সেই কদুই। এতো সময় নষ্ট করার কোন প্রয়োজন ছিলো না।
৫/ স্পষ্ট, নির্দিষ্ট ভাষা ব্যবহার করুনঃ-
![21-february](http://bloggertamim.files.wordpress.com/2012/11/21-february.jpg?w=560)
আপনি যা লিখতে চাচ্ছেন তা পরিষ্কার করে লিখুন। “স্পষ্ট, নির্দিষ্ট ভাষার” ব্যবহারই হচ্ছে পাঠক ধরে রাখার এক অন্যতম পদ্ধতি। এতে আপনি আপনার লেখার প্রতি পাঠকদের মনোযোগ ধরে রাখতে সফল হবেন।
৬/ আপনার লেখা গুলোকে সাধারণ/সহজ করুনঃ- 😉
![livro-nova-ordem-mundial-620x396](http://bloggertamim.files.wordpress.com/2012/11/livro-nova-ordem-mundial-620x396.jpg?w=434&h=277)
কি প্রয়োজন শুধু, শুধু আপনার আগুণকে “বায়ুশখা” লিখার? আরে ভাই/আপু আগুনকে আগুণ’ই লিখুন না। তবেই তো সর্বসাধারণ আপনার কথা গুলো বুঝতে সক্ষম হবে।
৭/ সব কিছু পরিষ্কার রাখুনঃ-
![writers-block](http://bloggertamim.files.wordpress.com/2012/11/writers-block.jpg?w=391&h=442)
এমনিতেই তো আর বলা হয়নি যে “পরিষ্কার পরিচ্ছনতা ঈমানের অঙ্গ”। আপনার লেখা গুলো অবশ্যই পরিষ্কার রাখবেন। নয়তো উপড়ের গরুর মতো হয়ে যাবে। আর এই বেঝাল গরু রচনা তৈরির মূল্য হিসেবে পাবেন “আপনার লেখাতে শুধু মাত্র আপনারি ভিজিট” 😛
৮/ বিরামচিহ্ন ঠিক রাখুনঃ-
![image_493_68731](http://bloggertamim.files.wordpress.com/2012/11/image_493_68731.jpg?w=560)
শুধু, শুধু তো বিরামচিহ্ন তৈরি করা হয় নি তাই না? প্রয়োজনেই তৈরি করা হয়েছে। তাই আপনাকে অবশ্যই পোষ্ট লেখার সময় কোথায়, কোথায় বিরামচিহ্ন বসবে তা দেখে নিয়ে বসিয়ে দিতে হবে”। এতে করে লেখার নিয়ম ঠিক থাকে। দেখতে সুন্দর দেখায়। বুঝতে সুবিধা হয়।
৯/ শৌখিন শব্দ এড়িয়ে চলুনঃ-
আমরা অনেক সময় কথা বলার সাথে বিভিন্ন রকমের মজাদার শব্দ, আঞ্চলিক শব্দ, ফ্যান জাতীয় শব্দ ব্যবহার করে থাকি। যেমন ধরুন আমি কাউকে চ্যাট এ বলছি “আপনার মুঞ্চাইলে ডাউনলোড করে নিন” ।
![article_writer](http://bloggertamim.files.wordpress.com/2012/11/article_writer.jpg?w=480&h=442)
এই যে “মুঞ্চাইলে” এটা কি সবার সামনে বলা যায়? হয়তো যায়। তবে তা কতোটা মানান সম্পূর্ণ? তাই এরকম শৌখিন শব্দ গুলো নিজেদের আড্ডার জন্য তুলে রেখে দিন। কোন পোষ্ট সঠিক ভাবে করতে চাইলে সেখানে মুঞ্চাইলের পরিবর্তে “ইচ্ছে হলে” ব্যবহার করুন।
সবাই ভালো থাকুন, ভালো থাকার চেষ্টা করুন। আর হ্যাঁ পোষ্ট ভালো লাগলে অবশ্যই মন্তব্য করে জানাবেন 😀