আপনার চুলের স্বাস্থ্য রক্ষায় কেমন চিরুনি প্রয়োজন?

বাজারে বিভিন্ন ধরণের চিরুনি পাওয়া যায়। কিন্তু সেগুলোর মাঝে কোনটি সঠিক আপনার জন্য? সঠিক চিরুনিটি নির্বাচনের পূর্বে কিছু বিষয়ের প্রতি খেয়াল রাখতে হবে। যেমন- আপনার চুলের ধরণ, চুলের ঘনত্ব ও আপনার চুলের স্টাইল কেমন ইত্যাদি। চিরুনি ব্যবহারের প্রধান কারণ হলচুলের ময়লা পরিস্কার করা, প্রতিটি চুলকে আলাদা করা, চিরুনির ব্রাশ যেন চুলের গোঁড়া পর্যন্ত পৌঁছে, নিঃসৃত হতে সহায়তা করতে পারে ও রক্ত চলাচল বৃদ্ধি করতে পারে এবং চুলের স্টাইল ঠিক রাখা। চিরুনিটি কি উপাদান দিয়ে তৈরি সেই বিষয়টিও গুরুত্বপূর্ণ। সাধারণত চিরুনি তৈরি হয় প্রাকৃতিক শক্ত রাবার দিয়ে বা উচ্চমানের প্লাস্টিক দিয়ে বা কাঠ দিয়ে। আসুন আমরা এখন যেনে নেই কোন ধরণের চুলের জন্য কোন ধরণের চিরুনি উপযুক্ত।

১। মোটা দাঁতের চিরুনি
এই প্রকার চিরুনির দাঁত গুলো মোটা ও প্রতিটা দাঁতের ফাঁক বেশি থাকে।এই ধরণের চিরুনি যে কোন গঠনের ও যে কোন দীর্ঘের চুল যেমন- কোঁকড়া, ঘন, সোজা ও দীর্ঘ চুলের জন্য ব্যবহার করা যায়। ভেজা ও শুকনো দুই অবস্থাতেই এই প্রকার চিরুনি ব্যবহার করা যায়।

২। মাঝারি দাঁতের চিরুন
মোটা দাঁতের চিরুনি থেকে মাঝারি দাঁতের চিরুনিতে দাঁতগুলো কিছুটা কাছাকাছি থাকে। যাদের চুলের গঠন স্বাভাবিক ও সুন্দর তাঁরা এই প্রকার চিরুনি নিয়মিত ব্যবহার করতে পারেন। বেশী কোঁকড়া চুলে ব্যবহার না করাই ভালো।

৩। সূক্ষ্ম দাঁতের চিরুনি
সরু দাঁতের চিরুনিতে দাঁতগুলো খুব কাছাকাছি থাকে। এই ধরণের চিরুনি গুলো সাধারণত চুল কাটার সময় ব্যবহার করা হয়। এছাড়াও চুলকে বিভিন্ন স্টাইলে সাজাবার জন্য ও সরু দাঁতের চিরুনি ব্যবহার করা হয়।

৪। অতিরিক্ত মোটা দাঁতের চিরুনি
এই প্রকার চিরুনির দাঁতগুলো অনেক মোটা হয় এবং প্রতিটি দাঁতের দূরত্বও অনেক বেশি হয়। শুকনা ও ভেজা দুই অবস্থাতেই এই চিরুনি ব্যবহার করা যায়।চুলের ভাঙ্গন রোধ করতে এই চিরুনি সব ধরণের চুলের পরিচর্যার জন্য ব্যবহার করা যায়। চুল ধোয়ার সময় এই প্রকার চিরুনি ব্যবহার করা হয়।
এছাড়াও আরো অনেক নামের ও অনেক রকমের চিরুনি পাওয়া যায়। যেমন-

প্যাডেল ব্রাশ
মাঝারি ও দীর্ঘ চুলের জন্য এই আয়তকার চিরুনিটি উপযুক্ত।এটি মাথার তালুর রক্ত চলাচল বৃদ্ধি করে।যাদের অনেক ঘন চুল তারা এই চিরুনিটি ব্যবহার করতে পারেন।

ভেন্ট ব্রাশ
ড্রায়ার দিয়ে চুল শুকানোর সময় এই ধরণের চিরুনি ব্যবহার করা হয়।এই চিরুনিতে দাঁতের ফাঁকে ফাঁকে ছিদ্র থাকে যার ভিতর দিয়ে গরম বাতাস চুলের গোঁড়ায় পৌঁছে দ্রুত চুল শুকাতে সাহায্য করে।
পিন ব্রাশ
কোঁকড়া ও ঘন চুলের জন্য এই চিরুনি ভালো।এই চিরুনিতে ধাতুর তৈরি ডিম্বাকৃতির বল বসানো থাকে যা সহজে ঘন চুলের ভেতরে প্রবেশ করতে পারে।

কুইল ব্রাশ
সকল ধরণের চুলের জন্যই কুইল ব্রাশ ভালো। এটা গোলাকার ব্রাশ।এটা মাথার তালুর ম্যাসাজ এর দ্বারা চুলের গোঁড়ায় তেলের নিঃসরণ বৃদ্ধি করে।
বোর ব্রিসল ব্রাশ
এই চিরুনির ব্যবহারে মাথার তালুর রক্ত চলাচল বৃদ্ধি পায় এবং তেল নিঃসরণ বৃদ্ধি পেয়ে চুলের উজ্জলতা বৃদ্ধি করে।
সাধারণ চিরুনি
আমরা সব সময় যে চিরুনি ব্যবহার করি সেই চিরুনি যা বিভিন্ন আকারে পাওয়া যায়।এই চিরুনি চুলকে মসৃণ ও স্নিগ্ধ করে।

আরও টিপস
-চুল ধোয়ার পরে আঁচড়াতে চাইলে অবশ্যই মোটা দাঁতের চিরুনি দিয়ে আঁচড়াবেন।
-কোন কোন সময় সব ধরনের চিরুনি পর্যায়ক্রমে ব্যবহার করা ভালো।যেমন-প্রথমেই পিন ব্রাশ বা মোটা দাঁতের চিরুনি দিয়ে চুলের বিরক্তিকর জট গুলো ছাড়িয়ে নিতে পারেন। তারপর কুইল ব্রাশ দিয়ে আঁচড়ালে মাথার তালুর ম্যাসেজ হবে এবং চুলের গোঁড়ায় তেলের নিঃসরণ বাড়বে। তারপর প্যাডেল ব্রাশ দিয়ে আঁচড়ালে চুল মসৃণ হবে, সবশেষে সাধারণ চিরুনি দিয়ে আঁচড়িয়ে নিলে চুল স্নিগ্ধ ও সুন্দর হবে।
-দুই এক দিন পর পর আপনার ব্যবহৃত চিরুনি দাঁত মাজার পুরনো ব্রাশ দিয়ে পরিস্কার করে সাবান পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
-খুব জোরে চুল আঁচড়াবেন না।
সর্বোপরি কোন চিরুনিটি আপনার জন্য ভালো হবে সেটি আপনি নিজেই যাচাই করে দেখুন এবং সংগ্রহে অনেক রকমের চিরুনি রাখুন।

Leave a Reply