ইসরায়েলে পাঁচ হাজার বছরের পুরনো বিশাল স্থাপত্যশৈলীর সন্ধান

ইসরায়েলে এই প্রথমবারের মতো প্রায় পাঁচ হাজার বছরের পুরনো পাথরের স্থাপত্যশৈলির সন্ধান মিলেছে। জেরুজালেমের হিব্রু বিশ্ববিদ্যালয়ের ডক্টরাল শিক্ষার্থী ইডো ওয়াসটেল এর সন্ধান পান।
সি অব দ্য গ্যালিলি থেকে আট মাইল উত্তর-পশ্চিমে বিশাল এলাকাজুড়ে এই স্থাপত্যের সন্ধান মেলে। এর আয়তন প্রায় পাঁচ লাখ কিউবিক ফুট। গোটা স্থাপত্যের দৈর্ঘ্য প্রায় ৪৯২ ফুট যা একটি আমেরিকার ফুটবল মাঠের চেয়েও লম্বা। সেখান থেকে সংগৃহীত তৈজসপত্র পরীক্ষা করে দেখা গেছে সেগুলো খ্রিষ্টপূর্ব ৩০৫০ অব্দ থেকে ২৬৫০ অব্দের মধ্যে তৈরি করা হয়েছিল। এতে বোঝা যায়, এর জন্ম হয়তো মিশরের পিরামিডেরও আগে।
এর আগে পুরাতত্ত্ববিদরা ধারণা করেছিলেন এটি হয়তো কোনো শহরের সীমানা প্রাচীর। কিন্তু এই প্রথমবারের মতো পরিষ্কার হলো যে, এই পুরো এলাকা আসলে একটি দাঁড়িয়ে থাকা স্থাপত্যকীর্তি।
এই এলাকা আবিষ্কারের পর ‘ইন্টারন্যাশনাল কংগ্রেস অন দ্য আর্কিওলজি অব দ্য অ্যানসিয়েন্ট নেয়ার ইস্ট’-এ এক প্রেজেন্টেশনে ওয়াসটেল এই প্রাচীন স্থাপত্যকে সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ প্রাচীর নিদর্শন বিবেচনা করে এর দেখভালের জন্য যাবতীয় পদক্ষেপ নেওয়ার আবেদন জানিয়েছেন।
ওয়াসটেল আরো বলেন, এই স্থাপত্যকে প্রাথমিকভাবে কোনো বিশেষ প্রতীকী অর্থ বহন করে বলেই মনে হচ্ছে। এর লুনার ক্রিসেন্টের আকৃতি দেখে তাই ধারণা করা যায়। প্রাচীন আমলে মেসোপটেমিয়া সভ্যতায় চাঁদের দেবতার নাম ছিল সিন এবং তার প্রতীক ছিল লুনার ক্রিসেন্ট।
এদিকে, এই স্থাপত্যশৈলীর থেকে এক দিনের পথ হেঁটে এমন এক অঞ্চলে পৌঁছানো যায় যার নাম ‘বেত ইরাহ’ যার অর্থ চাঁদের দেবতার বাড়ি। তাই ওই শহরের এলাকা চিহ্নিত করতেই হয়তো এই স্থাপত্য গড়া হয়েছিল। তবে একটি এলাকায় প্রবেশের সময় তার বেশ কাছাকাছি এসব স্থাপত্য তৈরি করা হয়। দেবতার শহর থেকে এই স্থাপত্যটি ১৮ মাইল দূরে তৈরি করা হয়েছে। গোটা স্থাপত্য ৪৯২ ফুট লম্বা ও ৬৬ ফুট চওড়া। এর উচ্চতা ২৩ ফুট, জানান গবেষক।
স্থানীয়রা একে আরবি ভাষায় ‘রাজুম ইন-নাবি সুয়াব’ বলেন। এই অঞ্চলের প্রোফেট জেথরো এর নামে এর নাম দিয়েছেন।
গবেষক আরো জানান, এটি গড়তে সর্বনিম্ন ৩৫ হাজার দিন অথবা সর্বোচ্চ ৫০ হাজার দিন সময় লেগেছিল বলে ধারণা করা হচ্ছে। যদি সর্বনিম্ন সময়কে বিবেচনা করা হয়, তবে প্রায় ২০০ জন শ্রমিক প্রায় পাঁচ মাস টানা পরিশ্রম করেছেন। এ সবই প্রাথমিক ধারণা থেকে বলা হয়েছে।
এর পাশে বড় আকৃতির আরো একটি স্থাপত্য রয়েছে। এর অবস্থান রাজুম এল-হিরিতে। এটি কবে তৈরি হয়েছে তা নিয়ে এখনো সংশয় রয়েছে। তবে খুব শিগগিরই এ নিয়ে বিস্তারিত কাজ শুরু হবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন তিনি। –

Leave a Reply