এক্সপ্লোরার বলটি লাফাবে আর ছবি তুলবে! (ভিডিওসহ)
এটা ছোটদের খেলার বলের মতো আচরণ করে। ছেড়ে দিলে লাফাতে লাফাতে ইচ্ছেমতো এদিক-ওদিক যাবে। কিন্তু এই বলটিই আধুনিক আইন সংস্থা, মিলিটারি অপারেশন এবং উদ্ধারকারী দলের কাছে দারুণ প্রয়োজনীয় বস্তু হয়ে উঠেছে। এটা আসলেই একটি বাউন্সিং বল। তবে তার ভেতরে রয়েছে ক্যামেরা। যেকোনো মারাত্মক পরিবেশে প্রবেশের আগে তার চিত্রটিও দেখার জন্যে এই ক্যামেরা বলটি বিস্ময়কর কাজ দিচ্ছে।
ম্যাসাচুসেটস ইন্সটিটিউট অব টেকনলজির শিক্ষার্থী ফ্রান্সিসকো অ্যাগুইলার এবং ডেভ ইয়ং উদ্ভাবনী ক্যামেরাটি তৈরি করেছেন। চলতি মাস থেকে বিভিন্ন কাজে এর ব্যবহার শুরু হয়েছে।
২০১০ সালে হাইতি ভূমিকম্পের উদ্ধারতৎপরতা চালানোর জন্যে কার্যকর উপায় খুঁজছিলেন বিশেষজ্ঞরা। এ নিয়ে কাজ করতেন ওই দুই শিক্ষার্থী। এতদিন ধরে ফাইবার অপটিকস ক্যামেরা প্রযুক্তি ব্যবহার করা হতো যা বেশ দামি, ভারী এবং প্রয়োজনীয় স্থানে সহজে পাঠানোর কাজে বেশ ঝামেলার সৃষ্টি করে। কিন্তু লাফানো বলের ক্যামেরা একেবারে সহজ সমাধান এনেছে যার ওজন কম, কম খরচে তৈরি করা যায়। এটি স্মার্টফোন এবং ট্যাবলেট দিয়েই নিয়ন্ত্রণ করা যায়।
এই বলটির নাম ‘এক্সপ্লোরার’। বাইরের অংশটি রাবার দিয়ে তৈরি যাতে লাফানোর বৈশিষ্ট্য রয়েছে। এর ভেতরে গোলাকার বলের চারদিকে রয়েছে ৬টি ক্যামেরা। প্রতিটি লেন্স একেক দিকের চিত্র ধারণ করে। বলটি দারুণ শক্তপোক্ত। ৭ ফুট ওপর থেকে কংক্রিটে ফেলে দিলেও ক্ষতিগ্রস্ত হয় না।
কোনো কাজে বলটিকে ছেড়ে দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তা লাফাতে লাফাতে এগোতে থাকে এবং এর ৬টি লেন্স প্রতি সেকেন্ডে একটি করে ছবি তুলতে থাকে। এই ছবিগুলো স্মার্টফোন বা ট্যাবে চলে আসবে। এতে যে সফটওয়্যারটি রয়েছে তা পাঠানো ছবিগুলো নিজেই জুড়ে নিয়ে পূর্ণাঙ্গ ছবি দেখাবে আপনাকে। ছবিগুলোকে সাজিয়ে গুছিয়ে নেওয়ার সফটওয়্যারটি তৈরি করেছেন কোস্টা রিকান ইনস্টিটিউট অব টেকনলজির প্রকৌশলীরা। মোটামুটি ৬০ ফুটের মধ্যে বলটি লাফাতে লাফাতে সব ছবি তুল পাঠিয়ে দেবে।
এতে ইনফ্রারেড এলইডি ফ্ল্যাশ দেওয়া হয়েছে যা টানা ৩০ মিনিট ধরে অন্ধকারে ফ্ল্যাশ জ্বালিয়ে ছবি তুলবে। এটা পরিচালনায় তেমন খরচবহুল এবং সময় অপচয় করে এমন প্রশিক্ষণের প্রয়োজন পড়বে না।
এই লাফানো ক্যামেরা বলের বহুবিদ ব্যবহার রয়েছে। আপাতত আইন প্রয়োগকারী সংস্থা, মিলিটারি ফোর্স এবং উদ্ধার তৎপরতা পরিচলনাকারী দলের কাজে এই বলটি দারুণভাবে কাজে লাগানো হচ্ছে। এক দল মানুষ অপহৃত হলে ভেতরের অবস্থা দেখতে অনায়াসে বলটি ছেড়ে দেওয়া যাবে। ভূমিকম্পে বিধ্বস্ত স্তূপের নিচে বলটি ছেড়ে দিয়ে জীবিত মানুষের সন্ধান সহজেই পাওয়া যাবে।
‘এক্সপ্লোরার’ এখন থেকে ১৪৯৫ ডলারে বিক্রি হচ্ছে। তবে পূর্ণ প্রযুক্তিসম্পন্ন বলটি কিনতে লাগবে ২৪৯৫ ডলার।
ভিডিওটি দেখুন = https://www.youtube.com/embed/Vb6dOpvUASM