আমরা নিজেকে দেখতে সুন্দর করার জন্য সবসময় চেষ্টা করি। কিন্তু এই সুন্দর্য বৃদ্ধি করার জন্য আমরা বেশির ভাগ সময় কৃত্রিম প্রসাধনির আশ্রয় নিই , আর এর ফলাফল সরূপ অনেক সময় আমরা আমাদের প্রকৃতি প্রদত্ত সুন্দর্যকে হারিয়ে ফেলি। এই লিখার মাধ্যমে আমরা আপনাদের কে শুধু প্রাকৃতিক সুন্দর্য বৃদ্ধি সম্পর্কে জানাব না , তার পাশাপাশি জানাব কিভাবে নিজেকে , শরীরকে এবং মনকে সুন্দর করা যায়।
প্রথমে নিজেই নিজেকে ভাবুন যে আপনি সুন্দরীঃ
আপনি যদি বিশ্বাস করেন যে আপনার থেকে সুন্দরী আর কেউ নেই তাহলে এর থেকে কার্যকরী কিছু হতে পারে না । এর পর যা করতে হবে তা হল নিয়মিত সুষম খাদ্য খেতে হবে এবং প্রচুর ব্যায়াম করতে হবে । প্রচুর হাটতে হবে , একা একা হাটতে ইচ্ছে না করলে গ্রুপ করে হাটতে হবে অথবা বাসার আশেপাশে প্রতিদিন জগিং করতে হবে ।
নিয়মিত ত্বক পরিষ্কার করুনঃ
ত্বক পরিষ্কার করার জন্য আগে জানতে হবে কিভাবে সঠিক পদ্দতিতে ত্বক পরিষ্কার করা যায় । এক্ষেত্রে ন্যাচারাল বা প্রাকৃতিক উপাদানে তৈরি ভালো কোন কোম্পানির পণ্য ব্যবহার করতে হবে । আপনার খাদ্য তালিকায় যতবেশি সম্ভব শাক-সবজি , ফলের রস এবং প্রতিদিন প্রচুর পানি পান করতে হবে । ভিটামিন ডি এবং সি ত্বকের সুস্থতার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ , আর এই চাহিদা পূরণ করার জন্য প্রয়োজনে ফুড সাপ্লিমেন্ট গ্রহণ করে ভিতামিন ডি এবং সি এর চাহিদা পূরণ করতে হবে । প্রতিদিন সকালে শীতল পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে পরিষ্কার করতে হবে এবং এলকোহল থাকেনা এইরকম কোন ত্বক পরিষ্কারক সামগ্রী ব্যবহার করুন । বেশির ভাগ ক্ষেত্রে দেখা যায় রোদ আমাদের ত্বকের অনেক ক্ষতি করে , তাই রোদে বের হওয়ার আগে সানব্লক যুক্ত ময়শ্চারাজিং ক্রিম ব্যবহার করতে হবে ।
চুল রং করানোর সময় যা না জানলেই নয়ঃ
যদি কখনো চুলের রং করাতে চান তাহলে সবসময় অ্যামোনিয়া মুক্ত রং (কালার) ব্যবহার করতে হবে । আর এর জন্য আপনার কালার এক্সপার্ট কে বলে দিতে হবে যেন আপনার চুলে অ্যামোনিয়া মুক্ত রং ব্যবহার করে ।
আপনার দাঁত মুক্তার মত সাদা রাখতে হলে নিয়মিত দাঁত ব্রাশ করতে হবেঃ
দাঁতের সুন্দর্য রক্ষা করার জন্য দিনে অন্তত দুবার দাঁত মাজতে হবে । এক্ষেত্রে ভালো মানের টুথ পেস্ট এর পাশাপাশি মাউথ- ওয়াশও ব্যবহার করা যেতে পারে । রাতে বিছানায় যাওয়ার আগে দাঁতের ফ্লজ ব্যবহার করতে হবে । আর বছরে অন্তত দুইবার ডেন্টিস্ট এর কাছে যেতে হবে এবং দাঁত পরিচর্চা করতে হবে । মনে রাখতে হবে সুস্থ-সবল দাঁত মানে সুন্দর হাসি , আর এই সুন্দর হাসি দিয়ে আপনি যে কাউকে মুগ্ধ করতে পারেন ।
প্রতিদিন মেকাপ ব্যবহার না করাঃ
বেশিরভাগ মেকাপ বিভিন্ন পশুর উপর প্রয়োগ করে দেখা গিয়েছে যে দীর্ঘ মেয়াদে মেকাপ ব্যবহার করা ত্বকের জন্য খুবই ক্ষতিকর । তাই একান্ত প্রয়োজন না হলে অথবা দীর্ঘ মেয়াদে মেকাপ ব্যবহার না করাই ভালো ।
নিয়মিত কিছু ব্যায়াম করুনঃ
মনে রাখতে হবে আমাদের স্বসাস্থ্য সচেতন হতে হবে, কিন্তু শরীরের প্রতি আবিষ্ট হওয়া যাবে না । আপনি বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে প্রচারিত অভিনব ওজন কমানোর পদ্দতি দেখে প্রভাবিত হওয়ার দরকার নেই , অথবা আনাছে-কানাছে গড়ে উঠা হেল্থ ক্লাব গুলার সাহায্য নেয়ারও প্রয়োজন নেই । আপনি যে ধরনের ব্যায়াম করে উপভোগ বা সাচ্ছন্দ বোধ করেন সেই রকম ব্যায়াম করেন । আতএব, আপনি যদি আপনার কুকুর নিয়ে হাটতে পছন্দ করেন, একা একা দৌড়াতে ভালো লাগে অথবা নাচতে ভালো লাগে তাহলে সেটাই করুন। নিয়মিত ব্যায়াম করলে আপনার আত্মবিশ্বাস অনেক বেড়ে যাবে এবং নিজেকে সুখী মনে হবে।
প্রতিদিন পর্যাপ্ত ঘুমাতে হবেঃ
এটা বিস্ময়কর যে আমরা প্রায়ই প্রতিদিন যে পরিমাণ ঘুমানোর কথা সে অনুযায়ী ঘুমাই না, আর ঠিকমত ঘুম না হলে শরীরের উপর বিরূপ প্রভাব পড়ে । তাই আমাদের কে নিয়মিত ন্যূনতম ৬ ঘণ্টা ঘুমানোর অভ্যাস করতে হবে। আর খেয়াল রাখতে হবে ঘুমানোর দুই ঘণ্টা আগে থেকে কিছু খাওয়া যাবে না। ঘুমানোর আগে মেডিটেশন করতে পারেন, মেডিটেশন ভালো ঘুম হওয়ার জন্য খুবই কার্যকরী।
এছাড়া নিজেকে অন্যের কাছে আকর্ষণীয় করার জন্য নিন্মের বিষয় গুলোর উপর খেয়াল রাখতে হবেঃ
১। সবসময় ইতিবাচক মনোভাব পোষণ করতে হবে, মনে রাখতে হবে মানুষ সবসময় ইতিবাচক মনোভাবের মানুষকে পছন্দ করে। আর এই একটা মাত্র গুনের কারনে আপনি সবার কাছে হয়ে উঠবেন আরো বেশি আকর্ষণীয় ।
২। সবসময় হাসি-খুশি থাকার কথা ভুলবেন না ।
৩। প্রতিদিন পরিপূর্ণ ভাবে বেচে থাকার চেষ্টা করুন। নিজেকে ভালবাসুন এবং আত্মবিশ্বাসী হউন ।
৪। চুলে কন্ডিশনার এবং শ্যাম্পু ব্যবহার করার পর ঠাণ্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে পরিষ্কার করতে হবে। এক্ষেত্রে গরম বা উষ্ণ পানি দিয়ে চুল ধোওয়া যাবে না।
৫। দুশ্চিন্তা করা যাবেনা। মনে রাখতে হবে মানসিক চাপ আপনার ত্বকের জন্য অনেক ক্ষতিকর।
৬। প্রতিদিন সকালে কাজে যাওয়ার আগে ১০ মিনিট যোগব্যায়াম করতে হবে।
সবশেষে মনে রাখবেন,
কৃত্রিম ভাবে হয়তো সাময়িক সুন্দর্য বাড়ানো যায় বিন্তু সেটা আসল সুন্দর্য নয়, আর একসময় তাদের এই নকল সুন্দর্য বেরিয়ে আসে। তাই আমাদেরকে কৃত্রিমতা পরিহার করে প্রাকৃতিক ভাবে প্রদত্ত সুন্দর্য বৃদ্ধির দিকে নজর দিতে হবে। আর তাহলেই হয়ে উঠবেন শারীরিক এবং মানসিক ভাবে প্রকৃত সুন্দরী।