খাবার খেয়ে ওজন কমানোর উপায়

বিভিন্ন খাবার তৈরিতে আমরা নানা ধরনের মসলা ব্যবহার করি। ওজন কমাতে সহায়ক খাবারও আছে প্রচুর। কিন্তু আমাদের অনেকের হয়তো অজানা যুগ যুগ ধরে ব্যবহার করে আসা মসলাগুলোতে রয়েছে বিস্ময়কর কিছু ঔষধিগুণ। মসলা শুধু আমাদের খাবারের স্বাদ আর ঘ্রাণই বাড়ায় না, এদের আছে রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা এবং মেটাবলিজম বাড়ায়। ফলে এগুলো ওজন নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে। না, ফলমূল আর সবজির কথা বলছি না। এর বাইরেও বেশ কিছু খাবার রয়েছে যেগুলো আপনার দেহের ফ্যাট কমাতে সাহায্য করে, ওজন নিয়ন্ত্রণ করে , একই সাথে আপনাকে রাখে সুস্থ ও সতেজ। চিনে নিন এমন কয়েকটি খাবারকে। যারা ওজন কমাতে চান তারা জেনে নিতে পারেন খাবার খেয়ে ওজন কমানোর উপায়, কোন কোন মসলা এবং খাবার আপনার ওজন কমাতে সাহায্য করে:

প্রথমেই জেনে নিন কোন কোন খাবার ওজন কমাতে সাহায্য করে

১। ডিম:
প্রোটিনের একটা অসাধারণ উৎস ডিম। ডিম শরীরের পেশী বৃদ্ধিতে সহায়তা করে ও ভালো কোলেসটোরল বাড়ায়। পেশী বৃদ্ধি মানেই অধিক চর্বি পোড়া। অন্যদিকে সকালের নাস্তায় সিদ্ধ ডিম খেলে সারাদিন ক্ষুধাও কম লাগে।

২। মধু:
মধু চর্বি ক্ষয় কোর্টে অত্যন্ত কার্যকরী উপাদান। হালকা কুসুম গরম পানির সাথে মধু মিশিয়ে সকালে খালি পেতে পান করুন, উপকার পাবেন।

৩। ওটস:
স্বল্প ক্যালোরির সুস্বাদু খাবারের মাঝে ওটস অন্যতম। এটা আছে প্রচুর ফাইবার যা আপনার মেটাবলিজম বাড়ায় ও কোলেসটোরল নিয়ন্ত্রণ করে।

৪। আপেল:
এতে আছে প্রচুর অ্যান্টিঅক্সিডেনট এবং পেকটিন, যা চর্বিকে ধ্বংস করে।

৫। কাঁচা মরিচ:
এতে আছে Capsaicin যা দ্রুত চর্বি পোড়াতে সহায়ক।

৬। রসুন:
রসুনে আছে Allicin যার অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল গুণাবলী খারাপ কোলেসটোরল কমায় ও ফ্যাট কমাতে সাহায্য করে।

৭।গ্রিন টি:
ওজন কমাতে দারুণ সহায়ক একটি খাবার এই গ্রীন টি। দিনে দু কাপ গ্রীন টি পান করুন, উপকৃত হবেন।

৮। টমেটো:
ওজন দ্রুত কমাতে ও ক্যান্সার প্রতিরোধ করতে টমেটো জুড়ি নেই।

এবার জেনে নিন কোন কোন মসলা আপনার ওজন কমাতে সাহায্য করে

১। দারুচিনি:
ওজন কমাতে দারুচিনি বিশেষ ভূমিকা রাখতে পারে। নিয়মিত দারুচিনি খেলে ক্ষুধা কমে যায়। শরীরের জমে থাকা মেদ গলাতে সাহায্য করে। এটি শরীরের সুগার লেভেল নিয়ন্ত্রণ করে, তাই ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য উপকারী। এছাড়াও পেটের রোগ, ইনফ্লুয়েঞ্জা, টায়ফয়েড, টিবি ও ক্যান্সার প্রতিরোধে দারুচিনি অনন্য ভূমিকা রাখে।

২। এলাচ:
এলাচে রয়েছে নানা রকম রাসায়নিক উপাদান। যেমন: টর্পিন, টপিনিনোল, সিনিওল, এসিটেট, টপিনিল ইত্যাদি। এইসব উপাদান শরীরের ফ্যাটবার্ন করার ক্ষমতা বাড়ায়। ফলে শরীরে ফ্যাট জমে না।

৩। আদা:
আদা শুধু সর্দি-কাশিতেই উপকারি না, এর রয়েছে অনেক গুণ। পেট পরিষ্কার করার ক্ষেত্রে আদা রাখতে পারে বিশেষ ভূমিকা। এটি পাচনতন্ত্রে জমে থাকা খাবার পরিষ্কার করে দেয় ফলে ফ্যাট জমতে পারে না। ফ্যাট না জমলে তো ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকবেই। আর গবেষণায় দেখা গেছে, ডায়াবেটিস সমস্যাতেও আদা খুবি কার্যকরী। এছাড়া আদার রস শরীরের জমে থাকা চর্বি দূর করতে সহায়তা করে।

৪। হলুদ:
হলুদের বিশেষ গুণ এই যে, এটি ফ্যাট টিস্যু তৈরি হতে দেয় না। ফলে ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকে।

৫। মরিচ:
মরিচে রয়েছে অ্যাকজেলিক এসিড, কিউনিক এসিড, অ্যামিনো এসিড, এস্কার্বিক এসিড, সাক্সিনিক এসিড, শিকিমিক এসিড, ফোলিক এসিড, সাইট্রিক এসিড, ম্যালিক এসিড, মেলানিক এসিড, আল্ফা-এমিরন, ক্যান্সিডিনা, ক্যারোটিন্স, ক্রিপ্টোক্যানসিন, ফ্ল্যাভনয়েডস প্রভৃতি। এগুলো ওজন নিয়ন্ত্রণে কাজ করে। আর মরিচের ক্যাপসিসিন ক্ষুধাও নিয়ন্ত্রণ করে। গবেষণায় দেখা গেছে মরিচ মেটাবলিজম বাড়িয়ে বেশি ক্যালরি বার্ন করতে সহায়তা করে।

৬। মৌরি:
মৌরি পাচনতন্ত্রের উপকার করে, খিদে কমায়। আর এটি লিভারেরও উপকার করে। মৌরি মাউথ ফ্রেশনার হিসেবেও কাজ করে।

৭। ইসবগোল:
ইসবগোল পেট পরিষ্কার রাখে, হজম শক্তি বাড়ায়। আর ক্ষুধা অনুভব কমায়। প্রতি রাতে শোয়ার আগে ইসবগোল খেলে ওজন কমবে। কোন কোন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ প্রতিবেলা খাবারের ১০ মিনিট পূর্বে তিন চামচ ইসবগোল খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন।

৮। জিরা:
বদহজম, পেট ফোলা এবং খাবারে অরুচি সমস্যায় জিরা খুবই উপকারি। পাইলস সমস্যায় মিছরির সাথে জিরা মিশিয়ে খেলে উপকার পাওয়া যায়। নিয়মিত জিরা খেলে ওজন কমে। বেশি খাবার খাওয়ার অস্বস্তি থেকেও জিরাপানি মুক্তি দেয়।

Leave a Reply