বৈশাখী উৎসব বলতে গেলে প্রায় এসেই পড়েছে। এদিকে আমাদের অনেকেরই সারাদিন বাইরে থাকতে হয় নানান কাজে। কারো অফিস, কারো ক্লাস, তাছাড়া আছে রমজানের বাড়তি ধকল। প্রতিদিন পোহাতে হয় যানজট, ধুলোবালি, অতিরিক্ত রৌদ্র আরও কত কি। এখন যেহেতু গ্রীষ্ম কাল, প্রচুর রোদের প্রকোপও থাকে সেই সাথে। যাদের শুষ্ক ত্বক, রোদে গেলে ত্বক আরও শুষ্ক হয়ে যায় আর রোদে পোড়া ভাব বাড়ে। অন্যদিকে চুলের তো কথাই নেই, গরমে চুলের ঝক্কিটাই বেশী পোহাতে হয়। খুসকি, শুষ্কতা, চুল পড়ে যাওয়া ইত্যাদি সমস্যা অতিরিক্ত আকার ধারন করে।
তবে এগুলো থেকে খুব সহজেই নিজেকে মুক্ত রাখা সম্ভব। শুধু দিন শেষে ঘরে এসে নিজের জন্য ১৫ মিনিট সময় রাখলেই হলো। আর প্রয়োজনীয় সব উপকরণ গুলো কমবেশি থাকে আমাদের সকলের ঘরেই। বৈশাখী উৎসবে পূর্বে এমনিতেই পার্লার গুলোতে ভিড় থাকে ভীষণ আর আপনার কাজের চাপও কি নেহাত কম? তাই আজ রইলো সহজ কিছু টিপস। এগুলো থেকে প্রতিদিন কিছু না কিছু করুন নিজের জন্য, বৈশাখী উৎসবে হয়ে উঠুন সতেজ ও লাবণ্যময়ী।
ত্বকের যত্নে-
- ১) যাদের স্বাভাবিক অথবা তৈলাক্ত ত্বক তারা মসুর ডাল বাটা+চন্দন+টকদই দিয়ে ১৫ মিনিট লাগিয়ে রাখুন। তারপর মুখ ধুয়ে নিজেই চমকে উঠবেন।
- ২) অনেকেরই ব্ল্যাকহেডস হওয়ার প্রবনতা লক্ষ করা যায়। দারচিনি গুঁড়া হাফ চামচ+১ চামচ ময়দার একটা প্যাক বানিয়ে নাকে লাগিয়ে রাখুন ২০ মিনিট। এমনি এমনি ব্ল্যাকহেডস বেরিয়ে আসবে। এটা দিলে একটু জ্বলে এবং স্কিন লাল হয়ে যায়। কিন্তু এতে ভয়ের কিছু নেই।
- ৩) যাদের বয়স ২৫ এর উপরে তারা কমলা লেবুর খোসার মাস্ক ব্যবহার করতে পারেন। কমলা লেবু বয়সের ছাপ দূর করে। ব্ল্যাকহেডস এবং হোয়াইটহেডসও চলে যায়।
- ৪) যাদের মুখে ব্রন আছে তারা নিম পাতার প্যাক ব্যবহার করতে পারেন। বাজারে অনেক ধরনের নিম পাতার প্যাক পাওয়া যায়। বেছে নিন পছন্দ মতন।
- ৫) একদিন পর পর বাসায় স্ক্রাবিং করতে পারেন। এতে ত্বকের গভীর হতে ময়লা বের হয়ে আসবে। চিনি, লেবু, চালের গুঁড়া সামান্য মধুর সাথে মেশালে খুব ভাল ন্যাচারাল স্ক্রাবার হিসাবে কাজ করে। সারা শরীরেই ব্যবহার করতে পারবেন।
- ৬) বাইরে থেকে ফিরে মুখের ও হাত পায়ের পোড়া দাগ দূর করার জন্য টক দই লাগিয়ে নিন।
- ৭) টমেটো এবং গাজরের রস মুখের বয়সের ছাপ দূর করার জন্য অনেক উপকারি। আবার রোদে পোড়া ভাব কমাতেও কাজে আসে।
চুলের যত্নে-
হট অয়েল ম্যাসাজঃ
এই গরমে প্রতিদিন তেল না দিতে পারলেও সপ্তাহে ১ বার রাতে হট অয়েল ম্যাসাজ করা উচিৎ। তেল গরম করে, ১০ মিনিট মেসেজ করে সারারাত রেখে সকালে উঠে শ্যাম্পু করে ফেলতে হবে। শ্যাম্পু করার পর অবশ্যই কন্ডিশন করে নিন। এতে করে চুল শুষ্ক হয় না, ঝরঝরে এবং নরম থাকে। ঈদের আগের দিন রাতে এটা অবশ্যই করুন।
ন্যাচারাল তেলঃ
কয়েক রকমের ন্যাচারাল তেল মিশ্রণ তৈরি করে ব্যবহার করলে চুল পড়া কমে যায়। নারিকেল তেল, ক্যাসটর অয়েল, বাদামের তেল, কালজিরা তেল, আমলকী তেল মিশিয়ে দিলে চুল পড়া কমে ও খুসকি চলে যায়। এতে চুল অনেকটাই মোলায়েম হয়।
চুলের প্যাকঃ
যাদের চুল অনেক রুক্ষ তারা চুলে প্যাক হিসাবে টক দই লাগিয়ে রাখতে পারেন ১৫ মিনিট। তারপর শ্যাম্পু করে ফেলবেন। এতে করে চুলের কন্ডিশনারের কাজ হয়ে যাবে। এটা সপ্তাহে ৩ বার করতে পারেন। সাথে মধু মিশিয়ে দিলে চুল ডীপ কন্ডিশন হয়ে যাবে। চুলে কলা, টক দই , ডিম দিয়ে প্যাক বানিয়ে ব্যবহার করতে পারেন। খুসকির জন্য আমলা প্যাক দেওয়া যেতে পারে। কিন্তু আমলা প্যাক চুলকে শুষ্ক করে ফেলে,তাই প্যাক তৈরির সময় সামান্য নারিকেল তেল দিয়ে নিতে পারেন।
সাথে মনে রাখবেন, কেবল রূপচর্চা আপনাকে সুন্দর করে তুলতে পারবে না। বরং দেহ সুস্থ থাকলেই ফুতে উঠবে সঠিক লাবণ্য। এর জন্য চাই সঠিক ডায়েট। প্রচুর পানি খেতে হবে। যাদের শাক সবজি খেতে ভালো লাগে না তারা রোজ একটা করে গাজর অথবা কমলা লেবু খান। কথায় আছে, যারা প্রতিদিন একটা করে গাজর খায় তারা কখনও বুড়ো হয় না। গাজর এ আছে প্রচুর ভিটামিন সি। গ্রীষ্মকাল এখন, বাজারে প্রচুর ফল। খাদ্য তালিকায় রাখুন এদের, সুস্থ থেকে নিজের অন্তর্নিহিত সৌন্দর্য ফুটিয়ে তুলুন।