সৌন্দর্যচর্চায় সেই রাজা বাদশাদের সময় থেকে যে উপাদানটি ব্যবহার হয়ে আসছে তা হল জাফরান। মশলার মধ্যে অনেক দামি একটি মশলা এই জাফরান। জাফরানের বৈজ্ঞানিক নাম হল ক্রোকাস সাটিভস। দক্ষিণ এশিয়ায় বেশি এটি জন্মগ্রহণ করে থাকে। বিশেষ করে কাশ্মিরে বেশি এর দেখা মেলে বেশি।
এই ফুলটি ফোটার সাথে সাথেই তুলে ফেলতে হয়, নতুবা নষ্ট হয়ে যায় জাফরানের ফ্লেভার। জাফরান মূলত এই ফুলের পরাগ। প্রায় ৫,০০,০০০ (পাচঁ লক্ষ) ফুল থেকে মাত্র ৫০ গ্রাম জাফরান পাওয়া যায়। আর এই কারণে অন্যান্য মশলা থেকে জাফরানের দাম অনেকটাই বেশি।
প্রাচীনকালে রাণীরা এই জাফরান ব্যবহার করতেন রূপচর্চায়। জাফরান ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করার সাথে সাথে বলিরেখা, ব্রণের দাগ, রোদে পোড়া দাগ দূর করে থাকে। খেয়াল করলে দেখবেন, আজকাল অনেক ভালো ব্রান্ডের ক্রিমেও জাফরানের নাম উল্লেখ থাকে। আসুন, আজ তাহলে জেনে নিই জাফরনের কিছু ফেসপ্যাকের কথা।
ত্বকের উজ্জলতায় জাফরনের কিছু দারুন ফেসপ্যাক-
১। জাফরান এবং কাঁচা দুধ
যা লাগবে- ৫ দানা জাফরান, ১/২ কাপ কাঁচা দুধ
জাফরান এবং কাঁচা দুধ মিশিয়ে ২-৩ ঘন্টা রাখুন। এই প্যাক ভাল করে মুখে লাগান। ১৫ মিনিট পর শুকিয়ে গেলে ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে দুইবার ব্যবহার করুন। এটি ত্বক ভিতর থেকে উজ্জ্বল করে থাকে। জাফরানে অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল উপাদান আছে যা ব্রণ দূর করে ত্বকের কালো দাগ দূর করে থাকে।
২। জাফরান এবং চন্দনের প্যাক
যা লাগবে- ২-৩ দানা জাফরান, ১ চা চামচ চন্দনের গুঁড়া, ২ টেবিল চামচ কাঁচা দুধ
চন্দন, কাঁচা দুধ, জাফরান ভাল করে মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করে নিন। পেষ্ট যেন ঘন হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখবেন। এই প্যাকটি মুখে ভাল করে ম্যাসাজ করে লাগান। শুকিয়ে গেলে ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এটি সপ্তাহে ২ থেকে ৩ বার ব্যবহার করুন ভাল ফলাফল পাওয়ার জন্য।
এই প্যাকটি তৈলাক্ত ত্বক এবং সেনসিটিভ ত্বকের জন্য অনেক বেশি কার্যকরী। এটি রোদে পোড়া দাগ, ব্রণের দাগ দূর করে থাকে। এছাড়া ত্বক ভেতর থেকে উজ্জ্বল করে থাকে। নিয়মিত ব্যবহারে এটি ব্রণ হওয়ার প্রবণতা কমিয়ে থাকে।
৩। জাফরান এবং মধুর প্যাক
যা লাগবে- ৪-৫ দানা জাফরান, ২-৩ টেবিল চামচ মধু
জাফরান এবং মধু ভাল করে মিশিয়ে প্যাক তৈরি করে নিন। মুখে ভাল করে লাগান। ১৫-২০ মিনিট পর শুকিয়ে গেলে ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। মধু ও জাফরানের প্যাক ত্বকের কালো দাগ দূর করে। এর পাশাপাশি বলিরেখা পড়া থেকে ত্বককে রক্ষা করে।