বয়স বাড়ার সাথে সাথে তার ছাপ পড়ে যায় ত্বকেও। কপালে বলিরেখা পড়তে থাকে, ত্বকের টানটান ভাব কমতে থাকে। আবার ত্বকের নিজস্ব কিছু সমস্যা অল্প বয়সেই আপনার ত্বকে বয়সের ছাপ ফেলতে পারে। যেমন ত্বকের যদি আর্দ্রতা ধরে রাখার ক্ষমতা কম হয়। তবে যথাসময়ে যথাযথ চেষ্টায় ত্বকের বয়স সহজেই রোধ করা সম্ভব। রোজকার সাধারণ কিছু যত্নেই আপনি প্রতিরোধ করতে পারবেন চেহারায় বয়সের ছাপ।
নিয়মিত সানস্ক্রিন ব্যবহার করুন
বলিরেখা, পিগমেন্টেশন ইত্যাদি ধরনের বয়সের লক্ষণগুলো বেশিরভাগই দেখা দেয় সূর্যের রশ্মি ত্বকের গভীরে প্রবেশ করে কোলাজেনের ক্ষতি করায়। নিয়মিত এসপিএফ সমৃদ্ধ সানস্ক্রিন ব্যবহার, শুধু বাইরের দূষণ থেকেই ত্বককে রক্ষা করে না, কোলাজেন গঠনেও ত্বককে সাহায্য করে। রোদে বেশিক্ষণ না থাকলে এসপিএফ-১৫ ব্যবহার করুন। তবে সারাদিন বাইরে থাকলে এসপিএফ ৩০-৪৫ ব্যবহার করুন। নিজের ত্বকের প্রকৃতি অনুযায়ী সানস্ক্রিন বেছে নিন।
চোখের যত্ন
শরীরের অন্যান্য অংশের তুলনায় চোখের চারপাশের অংশ বেশি পাতলা কম পরিমাণে ন্যাচারাল অয়েল বের হয়। আর এ কারণেই সহজেই চোখের চারপাশের অংশে বয়সের ছাপ পড়ে। নিয়মিত ময়েশ্চারাইজার ব্যবহারের পাশাপাশি আই ক্রিম ব্যবহার করুন। লিপিড, রেটিনল, ভিটামিন সি, ভিটামিন কে সমৃদ্ধ নাইট ক্রিম লাগান। প্রতিটি সমস্যার জন্য আলাদা আলাদা ক্রিম রয়েছে। চোখের তলায় ফোলা ফোলা ভাব (আইব্যাগ) কমান স্কিন টাইটনিং জেল দিয়ে। মসৃণ ত্বক চাইলে ব্যবহার করুন রেটিনল সমৃদ্ধ হাইড্রেটিং ক্রিম। চোখের তলার কালি দূর করতে হলে পেন্টাপেপটাইডস সমৃদ্ধ ঘন ক্রিম ব্যবহার করুন। রাতে নিয়মিত নাইট ক্রিম লাগান। ডে ক্রিম ত্বককে সারাদিন রক্ষা করে। নাইট ক্রিম ক্ষতি সারায়। প্রতিদিন শোয়ার সময় কয়েক ফোঁটা আমন্ড অয়েল চোখের পাতায় এবং চোখের চারধারে মাসাজ করুন। বাইরে থেকে বাড়ি ফেরার পর তুলোর প্যাড শসার রসে ডুবিয়ে ১০ মিনিট চোখের পাতার উপর দিয়ে বিশ্রাম করুন।
ফেসিয়ালে ক্লেনজিং, এক্সপার্ট মাসাজ থেকে শুরু করে সেল রিজেনারেশন, টক্সিন নির্গমন সবই হয়। মাসে অন্তত একবার ফেসিয়াল করুন। তৈলাক্ত ও অ্যাকনে প্রবণ ত্বকে ক্লে বেসড ফেসিয়াল এবং শুষ্ক ত্বকে ক্রিম ফেসিয়াল ভালো কাজ করে।
মেকআপ তোলা
দিনের শেষে নিয়ম করে মেকআপ তুলে ফেলুন। ঈষদুষ্ণ ও ঠাণ্ডা পানি দিয়ে বারবার মুখ ধুলে ত্বক থেকে ধুলাময়লা বের হয়ে যায়। কসমেটিক স্পঞ্জ, পাউডার পাফ নিয়মিত পালটান। এক মাস পর পর মেকআপ ব্রাশ মাইল্ড শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
সহজে ভাঁজ পড়া অংশগুলো
মুখ ছাড়া গলা ও হাতেও বয়সের ছাপ সহজে পড়ে। প্রতিদিন সকালে ও রাতে মুখে সাথে গলাও ফেসওয়াস বা মাইল্ড সাবান দিয়ে অবশ্যই পরিষ্কার করবেন। সকালে বের হবার সময় গলায় সানস্ক্রিন লাগাতে ভুলবেন না। রাতে শোয়ার সময় গলায় ময়েশ্চারাইজিং ক্রিম অবশ্যই মাসাজ করবেন। মাসাজের স্টোকগুলো যেন কলার বোন থেকে শুরু হয়ে চোয়াল পর্যন্ত পৌঁছায়। মাসে একবার ম্যানিকিওর করুন। কনুইয়ের চামড়া যদি শক্ত এবং শুকনো হয়ে যায় তাহলে গ্লিসারিন ও লেবুর রস দিয়ে নিয়মিত মাসাজ করুন। রোদে বের হবার আগে হাতেও ময়েশ্চারাইজার লাগান।
চুল
বয়সের ছাপ কিন্তু পড়ে চুলেও। আবার বয়সের ছাপ লুকাতে চুল একটা বড় ভূমিকা পালন করে। প্রতিদিন এক জায়গায় সিঁথি করবেন না। কিছুদিন পর পর সিঁথির জায়গা বদলান। সরু দাঁতের চিরুনি দিয়ে চুল আঁচড়াবেন না। মোটা দাঁতের চিরুনি দিয়ে চুল আঁচড়ান। লম্বা চুল হলে চুলের নিচ থেকে জট ছাড়াতে শুরু করুন। চুলের বিশেষ কোনো সমস্যা না থাকলে মাইল্ড শ্যাম্পু ব্যবহার করুন। নিজের মুখ, চেহারার গড়নের সাথে মানানসই হেয়ারকাট করুন।