আমাদের শরীরের সবচাইতে বেশি অংশ জুড়ে থাকে আমাদের ত্বক। ত্বক দেখে বোঝা যায় শরীরের ভেতরের অনেক রোগের উপস্থিতি। ত্বকের বিভিন্ন পরিবর্তন যেমন রঙ অন্যরকম হয়ে যাওয়া, ফোঁড়া ওঠা ইত্যাদি হতে পারে বেশ বড় কোনো রোগের পূর্বাভাস। এসব লক্ষণ দেখতে পেলে, বিশেষ করে লক্ষণগুলো কয়েক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে থাকলে অবশ্যই যোগাযোগ করুন ডাক্তারের সাথে।
ত্বকে র্যাশ এবং ছোপ ছোপ দাগ-
- – যেসব র্যাশ ওষুধ খেলেও যায় না, এবং এর সাথে থাকে জ্বর, গিঁটেগিঁটে ব্যাথা এবং পেশি ব্যাথার মতো উপসর্গ, এগুলো হতে পারে শরীরের অভ্যন্তরীণ কোনো সমস্যা বা ইনফেকশনের লক্ষণ।
- – কোনো কিছুতে অ্যালার্জি থাকলে বা কোনো ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া থাকলে সেটারও লক্ষণ হতে পারে র্যাশ।
- – ঘাড়ের পেছনে ত্বকের চাইতে একটু গাড় রঙের মিহি র্যাশ থাকলে সেটা হতে পারে টাইপ টু ডায়াবেটিসের লক্ষণ। এমনকি দুর্লভ কিছু ক্ষেত্রে তা হতে পারে পাকস্থলী অথবা যকৃতের ক্যান্সারের লক্ষণ।
- – পায়ের নিচের দিকে লালচে র্যাশ যা সাধারণ ওষুধে যায় না- এটি হতে পারে হেপাটাইটিস সি ইনফেকশনের লক্ষণ।
ত্বকের রঙ পরিবর্তন-
- – ডায়াবেটিস রোগীদের ক্ষেত্রে ত্বকের রঙ তামাটে হয়ে গেলে বুঝতে হবে তাদের শরীরের আয়রন মেটাবলিজমে কোনো সমস্যা হচ্ছে।
- – ত্বকে হলদেটে ভাব চলে আসা হতে পারে যকৃতের অসুস্থতার লক্ষণ। এই হলদেটে ভাব দেখা যেতে পারে চোখের সাদা অংশেও।
- – কনুই, হাঁটু বা বিভিন্ন পুরনো ক্ষতের ত্বকের রঙ আগের চাইতে আরও বেশি কালচে হয়ে গেলে তা হতে পারে হরমোনজনিত কোনো অসুখের লক্ষণ, যেমন অ্যাডিসন’স ডিজিজ।
ফোঁড়া, ফোসকা বা গোটা-
- – এ ধরণের উপসর্গ ক্যান্সারে রূপ নিতেই পারে, তাই সাবধান থাকা প্রয়োজন।
- – কখনো কখনো তা হতে পারে বংশগত কোনো রোগের লক্ষণ।
- – শরীরের বিভিন্ন অংশে হলদেটে গোটা উঠলে তা হতে পারে ডায়াবেটিসের লক্ষণ।
- – এমনকি ব্রণের মতো দেখতে কিছু গোটা হতে পারে অন্য রোগের লক্ষণ। নারীদের চোয়াল বরাবর ব্রণ থাকলে তা হতে পারে পলিসিস্টিক ওভারিয়ান সিনড্রোম এর লক্ষণ। এর পাশাপাশি থাকতে পারে ওজন কমে যাওয়া, মাথার চুল কমে যাওয়ার মতো সব লক্ষণ।
নখের পরিবর্তন-
- – নখ দেখে যদি মনে হয় ফাঙ্গাসের আক্রমণ, তবে আসলে তার কারণ হতে পারে সোরিয়াসিস।
- – যকৃত বা কিডনির সমস্যার কারণে অনেক সময়ে নখের রঙ পরিবর্তিত হয়ে যায়।
ত্বক শুষ্ক বা পুরু হয়ে যাওয়া-
- – উচ্চ রক্তচাপ বা কিডনির সমস্যায় অনেক সময় পায়ের ত্বক পুরু হয়ে যেতে পারে।
- – ত্বক খুব শুষ্ক এবং খসখসে হয়ে গেলে তা হতে পারে বিভিন্ন হরমোনজনিত সমস্যা, বিশেষ করে অকেজো থাইরয়েডের লক্ষণ। অনেকে একে একজিমা মনে করেন। কিন্তু জীবনে কখনো একজিমা না হবার পর যদি মধ্যবয়সে এসে একজিমার মতো লক্ষণ দেখা দেয় তবে তা হরমোনের সমস্যা হবার সম্ভাবনা প্রবল।
- – আবার খুব বেশি মসৃণ এবং নমনীয় ত্বক হতে পারে কিউটিস ল্যাক্সা নামের একটি দুর্লভ রোগের লক্ষণ, যা হতে পারে ব্লাড ক্যান্সারের পূর্বাভাস।