মানবদেহের পা একটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। পা না থাকলে মানুষ হাঁটতে পারে না, তেমনি পায়ে ব্যর্থ থাকলেও হাঁটতে খুবই অসুবিধা হয়। আর চলাফেরা যিনি করতে পারেন না, তিনি তো পঙ্গু বৈ আর কিছুই নয়। মানবদেহের পায়ের প্রধান দু’টি অংশ হলো গোড়ালি ও পায়ের পাতা। পায়ের গোড়ালিতে যেসব কারণে ব্যথা হয় তার মধ্যে ক্যালকেনিয়ান স্পারই বেশি দায়ী। তা ছাড়া পায়ে কোনো আঘাত লাগলে বা পায়ের হাড় ভেঙে গেলে ব্যথা হয়। ক্যালকেনিয়ান স্পার থেকে অনেক সময় প্রদাহ হয়ে প্লাস্টার ফাসাইটিস হতে পারে। তা ছাড়া গেঁটেবাত, ওস্টিওমাইলাইটিস, স্পন্ডাইলোঅর্থোপ্যাথি ইত্যাদি রোগে পায়ের গোড়ালিতে ব্যথা হতে পারে। তবে বয়স বাড়লে ক্যালকেনিয়ান স্পার বা কাটার কারণেই বেশি হয় পায়ে ব্যথা।
এ রোগের উপসর্গগুলো নিম্নরূপঃ
-পায়ের গোড়ালিতে ব্যথা। ব্যথা সাধারণত হাঁটলে বেড়ে যায়।
– গোড়ালি কখনো কখনো ফুলে যেতে পারে।
– খালি পায়ে শক্ত জায়গায় হাঁটলে সাধারণত ব্যথা বেশি বাড়ে।
– প্লাস্টার ফাসাইটিস হলে পায়ের গোড়ালিতে ব্যথা সকালে বেশি থাকে এবং তা বেলা বাড়ার সাথে সাথে একটু কমে আসে।
– কখনো কখনো গোড়ালি শক্ত শক্ত মনে হয়।
– শক্ত জুতা ব্যবহার করলেও ব্যথা বেড়ে যায়।
চিকিৎসা
সাধারণত ব্যথানাশক ওষুধ যেমনপ্যারাসিটামল, ইন্ডোমেথাসিন, নেপ্রক্সিন ইত্যাদি দেয়া যেতে পারে। প্রয়োজন অনুসারে ফিজিক্যাল থেরাপি, যেমন মোম থেরাপি, হাইড্রোথেরাপি, আল্ট্রাসাউন্ড থেরাপি ইত্যাদি দেয়া যেতে পারে। জুতার পরিবর্তন যেমন নরম সোল ব্যবহার করা, আর্চ সাপোর্ট দেয়া, গোড়ালির কাছে ছিদ্র করে নেয়া ইত্যাদি। কোনো কোনো ক্ষেত্রে অপারেশন করে ক্যালকেনিয়ান স্পার বা কাটা কেটে ফেলতে হয়।
পায়ের গোড়ালিতে ব্যথা রোগীর জন্য উপদেশ
– সব সময় নরম জুতা ব্যবহার করবেন।
– শক্ত স্থানে বেশিক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকবেন না বা হাঁটবেন না।
– ভারী কোনো জিনিস, যেমনবেশি ওজনের বাজারের থলি, পানিভর্তি বালতি ইত্যাদি বহন করবেন না।
– সিঁড়ি দিয়ে ওঠার সময় মেরুদণ্ড সোজা রেখে হাতে সাপোর্ট দিয়ে ধীরে ধীরে উঠবেন ও নামবেন এবং যথাসম্ভব গোড়ালির ব্যবহার কম করবেন।
– ব্যথা বেশি থাকা অবস্থায় কোনো প্রকার ব্যায়াম নিষেধ।
– হাই হিল জুতা ব্যবহার করা নিষেধ।
– মোটা ব্যক্তিদের শরীরের ওজন কমাতে হবে।
– মালিশ ব্যবহার করবেন না।
এসব পরামর্শ মেনে চললে একজন সুস্থ মানুষও এ রোগ থেকে দূরে থাকতে পারে। তাই আসুন, আমরা সবাই এগুলো মেনে চলি এবং পায়ের সমস্যা থেকে দূরে থাকি।