ঘরে বা ফ্রিজে থাকা অনেক জিনিস দিয়েই ব্রণ, শুষ্ক-ত্বক, রুক্ষ-চুলসহ নানান সমস্যা সমাধান করা যায়।
রূপচর্চাবিষয়ক একটি ওয়েবসাইটে ঘরোয়া সহজলভ্য উপকরণ ব্যবহার করে ত্বক ও চুলের সমস্যা থেকে রেহাই পাওয়া টোটকা উল্লেখ করা হয়।
ব্রণ এবং শুষ্ক ত্বকের জন্য মধু
মধু ব্যাক্টেরিয়ার কারণে হওয়া ব্রণ দূর করতে সাহায্য করে। তবে মধু ত্বক শুষ্ক করে না। কারণ এর মিষ্টিভাব ত্বকে পানি ধরে রেখে আদ্রভাব বজায় রাখে। পরিষ্কার ত্বকে মধু লাগিয়ে ১০ মিনিট পর ধুয়ে ফেললেই ত্বক কোমল হয় এবং ব্রণের সমস্যাও কমে আসে। তাছাড়া ওটমিলের সঙ্গে এক টেবিল-চামচ মধু মিশিয়ে স্ক্রাব হিসেবেও ব্যবহার করা যেতে পারে।
ঘরোয়া বডি স্ক্রাব তৈরি
প্রাকৃতিক বডি কেয়ার লাইন ‘মেডিসিন মামা’স অ্যাপোথিকেরি’র প্রতিষ্ঠাতা ডোনা স্টেইনম্যান ঘরোয়া উপায়ে ত্বক কোমল করার একটি স্ক্রাব তৈরির উপায় জানিয়েছেন। এই স্ক্রাব তৈরি করতে প্রয়োজন হবে একটি পাকা অ্যাভাকাডো, এক টেবিল-চামচ সামুদ্রিক লবণ, এক টেবিল-চামচ এক্সট্রা ভার্জিন অলিভ অয়েল এবং এক টেবিল-চামচ মধু।
স্টেইনম্যান বলেন, “অ্যাভাকাডো, অলিভ অয়েল এবং মধু, এই প্রতিটি উপাদানই ত্বকের আর্দ্রতা বজায় রাখতে সাহায্য করে। আর লবণ একজিমাসহ ত্বকের আরও কিছু সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে।”
ত্বক পরিচর্যার জন্য চা জমিয়ে নেওয়া
পানিতে চা পাতা ফুটিয়ে তা বরফ হিসেবে জমিয়ে নিতে হবে। এই বরফের টুকরা ত্বকে ঘষে নিতে হবে, যতক্ষণ না তা পুরেপুরি গলে যায়। সপ্তাহে একবার ব্যবহারে ত্বকের বিভিন্ন সমস্যা দূর করা যায়। প্রসাধনী ব্র্যান্ড ‘ফ্রেশ’য়ের সহ-প্রতিষ্ঠাতা লেভ গ্লেজম্যান বলেন, “চায়ের ট্যানিন ত্বক পরিষ্কার করতে সাহায্য করে।”
দুধের দু’টি ব্যবহার
নিউ ইয়র্কের চর্মরোগবিশেষজ্ঞ এলিন মার্মুর বলেন, “দুধ একটি প্রাকৃতিক ময়েশ্চারাইজার, যাতে আছে প্রচুর ল্যাকটিক অ্যাসিড। এটি ত্বকের মৃত কোষ দূর করে ত্বকের জ্বলুনি দূর করতে সাহায্য করে।”
ত্বকের উজ্জ্বলতা ধরে রাখতে ঠাণ্ডা দুধে একটি পরিষ্কার কাপড় ভিজিয়ে মুখে চেপে ধরে রাখতে হবে পাঁচ থেকে ১০ মিনিট।
মার্মুর বলেন, “এই চাপের ফলে ত্বকের ফোলাভাবও কমে যাবে।”
ত্বকের রোদে পোড়াভাব এবং ক্লান্তি দূর করতেও দুধ কার্যকর। খানিকটা দুধে বরফ কুচি দিয়ে তাতে একটি পরিষ্কার কাপর ভিজিয়ে ত্বকে চেপে ধরে রাখতে হবে। এই প্রক্রিয়ায় রোদে পোড়া ত্বক, এর জ্বলুনি, লালচেভাব ও চুলকানি দূর হবে।
বেকিং সোডা থেকে স্ক্রাব
বেকিং সোডা শুষ্ক ত্বক থেকে মৃত কোষ দূর করতে সাহায্য করে। শুধু ত্বক নয় ঠোঁটের মৃত কোষ দূর করতেও দারুণ কার্যকর। বেকিং সোডার সঙ্গে খানিকটা লেবুর রস মিশিয়ে একটি ক্রিমের মতো পেস্ট তৈরি করে নিতে হবে। এই পেস্ট স্ক্রাব হিসেবে ব্যবহার করা যাবে।
ব্রণ দূর করতে আদা
মার্মুর বলেন, “আদার একটি ছোট অংশ কেটে নিয়ে তা ব্রণাক্রান্ত ত্বকে হালকাভাবে ম্যাসেজ করে পাঁচ মিনিট লাগাতে হবে। আদার রস ব্রণের ব্যাক্টেরিয়া ধ্বংস করবে। তবে ত্বক শুষ্ক করবে না। এটা চামড়ার ভেতরে গজানো লোমও দূর করতে পারে।”
উশকোখুশকো চুল ঠিক করতে বাদামতেল
অনেক সময় ঘুম থেকে উঠে দেখা যায় চুল এলোমেলো হয়ে আছে আর তা কোনোভাবেই ঠিক করা যাচ্ছে না। তখন চুলে কয়েক ফোঁটা বাদামতেল মাখিয়ে নিলেই চুলের উশকোখুশকোভাব দূর করা যায়।
নখের হলদেভাব দূর করা
অনেক সময় তরকারির মসলা বা নেইলপলিশের কারণে নখ হলদে হয়ে যেতে পারে। কুসুম গরম পানিতে অর্ধেক লেবুর রস চিপে নখ ১০ মিনিট ভিজিয়ে রাখলে, স্বাভাবিক রং ফিরে আসবে।
লোমকূপ সংকোচন
বাটিতে একটি ডিমের সাদা অংশ, এক টেবিল-চামচ মধু ও এক টেবিল-চামচ লেবুর রস ভালোভাবে মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করতে হবে। এই মিশ্রণ মুখে মেখে ১০ মিনিট অপেক্ষা করে বা কিছুটা শুকিয়ে আসলে ধুয়ে ফেলতে হবে। এই মিশ্রণ প্রাকৃতিক অ্যাস্ট্রিনজেন্ট হিসেবে কাজ করবে।
ঝলমলে চুলের জন্য
আধা কাপ অ্যাপেল সাইডার ভিনিগারের সঙ্গে অর্ধেক লেবুর রস মিশিয়ে চুলে লাগাতে হবে। কিছুক্ষণ অপেক্ষা করে শ্যাম্পু করে চুল ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে দু’বার এই মিশ্রণ ব্যবহার করা যায়।