যে অভ্যাসগুলো থাকলে হাজার চেষ্টায়ও ওজন কমাতে পারবেন না

অনেক সময়েই দেখা যায় খাবার নিয়ন্ত্রণ সহ অনেক নিয়ম মানার পরও ওজন কমে না। তাই তখন খুঁজে দেখতে হবে যে আসলেই কি কারণে ওজন কমছেনা। পুরো নিয়মের মাঝে হয়তো কোনো ভুল আছে। কারন দেখা যাচ্ছে আপনি হয়তো আপনার উপযোগী সঠিক ডায়েট অনুসরণ করছেন না বা ভুল সময়ে ভুল খাবার খাচ্ছেন অথবা আপনার খাদ্যাভ্যাস হয়তো আপনার ওজন কমানোর জন্য উপযোগী না।

ওজন কমানোর ক্ষেত্রে ব্যক্তি বিশেষের খাবারের ধরন আলাদা হয়। তবে অনেকের মাঝে এই নিয়মটা দেখা যে, কেউ কোনো ডায়েট অনুসরণ করে হয়তো ওজন কমাতে পেরেছেন সবাই চোখ বন্ধ করে সেই ডায়েট অনুসরণ করার জন্য হুমড়ি খেয়ে পড়েন। কেউ এটা বিবেচনা করেন না যে, সেই ডায়েট আদৌ তার উপযোগী কিনা।

তাই যারাই ওজন কমাতে গিয়ে ব্যর্থ হয়েছেন তাদের বলবো, একটু ফিরে তাকান আপনাদের দৈনন্দিন অভ্যাসগুলোর দিকে। এমন কোনো কাজ করছেন না তো যা আপনার ওজন কমানোর উদ্দেশ্য থেকে আপনাকে দূরে ঠেলে দিচ্ছে?
এখানে সেই ত্রুটিপূর্ণ অভ্যাস গুলোর কিছু তুলে ধরা হলো-

কোনো এক বেলার খাবার বাদ দেয়া
অনেকেই দেখা যায় ওজন কমানোর উদ্দেশ্যে বা স্বভাব বশত যেকোনো এক বেলার খাবার বাদ দিয়ে দেন। এটা কোনো ভাবেই ভাল নয়। এই অভ্যাসটির কারণে রক্তের শর্করার মাত্রা হঠাৎ কমে যায়। যার ফলে ওই সময়ের পরে আপনার উচ্চ ক্যালরিযুক্ত খাবার খেতে ইচ্ছে করবে যা ওজন কমানোর জন্য সহায়ক নয়।

কম পানি পান করা
দৈনিক ২ লিটার পানি পান করলে তা আপনার দেহের বিপাকক্রিয়ার গতিই শুধুমাত্র বৃদ্ধি করে না সেই সাথে এটা পাকস্থলীতে খাবার ধারণের জায়গা কমিয়ে দেয়। যার ফলে খাবার খাওয়া কম হয় এবং ওজন কমাতে সাহায্য করে। কিন্তু যদি দেহের প্রয়োজন অনুযায়ী পানি পান না করেন তাহলে ওজন না কমে বৃদ্ধি পাবে।

প্রক্রিয়াজাত করা খাবার
প্রক্রিয়াজাত করা খাবার কোনোভাবেই স্বাস্থ্যকর নয়। এই খাবার গুলোর কোনো ধরনের পুষ্টিগুণ নেই। শুধুমাত্র শর্করা এবং ক্যালরিতে পরিপূর্ণ। এই খাবার গুলো শুধুমাত্র দেহের ওজন বৃদ্ধি করতে পারে।

বাজারের প্রক্রিয়াতে ত্রুটি
যদি ঘন ঘন বাজারে যাওয়ার অভ্যাস থাকে আর বাজারে গিয়ে গ্রসারি কর্নারের দিকে আসক্তি থাকে তাহলে তা ভালো অভ্যাস গুলোর মাঝে পড়বে না। কারণ সেখানে বেশি ক্যালরি বহুল খাবারের দিকেই নজর থাকবে। স্বাস্থ্যকর খাবারের চেয়ে অস্বাস্থ্যকর খাবার গুলোই আপনার বেশি কিনতে ইচ্ছে করবে। তাই ঘন ঘন বাজারে না গিয়ে নির্দিষ্ট কিছু দিন ঠিক করে যাবার একটি প্রয়োজনীয় জিনিসের একটি তালিকা করে নিয়ে যান।

কফি আসক্তি থাকলে
যদি কারো মাঝে খুব বেশি কফি আসক্তি থাকে তাহলে সেই অভ্যাসটি খুবই ক্ষতিকর। কারণ অধিক পরিমান কফি পান করলে তা কর্টিসল নামক স্ট্রেস হরমোনের পরিমান বাড়ায়। যা অস্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়ার ইচ্ছাকে বাড়িয়ে দেয়। এর ফলে ওজন না কমে বৃদ্ধি পায়। এটি অত্যন্ত খারাপ একটি অভ্যাস। যা ওজন কমাতে বাধা সৃষ্টি করে।

মানসিক চাপে থাকলে
অত্যাধিক মানসিক চাপ বিপাকক্রিয়ার গতিতে বাধা সৃষ্টি করে এবং সেই সাথে বেশি খাওয়ার প্রবণতা বাড়ায়। আর মূলত এই কারণেই তখন এমন কিছু খাবার খাওয়া হয় যা ওজন কমানোর জন্য মোটেও খাওয়া উচিত নয়।

দ্রুত খাবার গ্রহণ
খাবারের সাধারণ নিয়ম হচ্ছে খুব ভাল করে চিবিয়ে খাওয়া। খুব ভাল হয় যদি খাবার গিলে ফেলার আগে ৩০-৪০ বার চিবিয়ে নেয়া। যদি খুব দ্রুত খাবার খাওয়া হয় তাহলে তা দেহকে এক অর্থে কোনো পুষ্টিই সরবরাহ করে না শুধুমাত্র ফ্যাট ছাড়া। তাই এই অভ্যাস যদি কারো থাকে তা ওজন বৃদ্ধিতে সহায়তা করবে না।

সঠিক সময়ে পর্যাপ্ত পরিমান না ঘুমানো
প্রতিটি মানুষেরই সারাদিনে কমপক্ষে ৭-৮ ঘণ্টা ঘুমানো প্রয়োজন। যদি এই ঘুম থেকে নিজেকে বঞ্চিত করা হয় তাহলে তা ওজন কমানোর পক্ষে কাজ করবে না। আর সঠিক সময়ে না ঘুমালে সেটা স্বাস্থ্যের উপর খারাপ প্রভাব ফেলে।

রাতে দেরি করে খাওয়া
অনেকেই রাতে দেরি করে খান। অর্থাৎ খাওয়ার পর পরই ঘুমাতে যান এতে করে খাবার হজম হবার সময় পায়না। যা দেহে ফ্যাট হিসেবে জমা হয়। তাই এই সময়ে বেশি খাবার না খেয়ে খুব কম পরিমান খাবারও খাওয়া হয় তা আপনার ওজন বৃদ্ধির জন্য যথেষ্ট।

Leave a Reply