সব ধরনের ত্বকের রেগুলার ফেসিয়াল

সবার জন্য নিয়ম মাফিক ফেসিয়াল করা জরুরী। ত্বকের পুরনো লাবণ্য, উজ্জ্বলতা ফিরিয়ে আনতে নিয়মিত ফেসিয়ালের জুড়ি নেই। তবে মনে রাখবেন গোল্ড, সিলভার, ডায়মন্ড, ফেয়ার পলিশ কোনটাই ২৮ বছর বয়সের আগে করা উচিত না। হারবাল জাতীয় ফেসিয়ালের কিছু প্রাকৃতিক উপাদান আছে যা সব ধরনের ত্বকে ব্যবহার করতে পারেন। এই প্রাকৃতিক উপাদানগুলো ত্বকে লুকিয়ে থাকা ধূলো ময়লা, বিষাক্ত পদার্থ বের করে আনার ক্ষমতা রাখে। আপনাদের জন্য খুশির খবর হলো এই ফেসিয়াল করার জন্য আপনাকে পার্লারে দৌড়াতে হবে না। আমি আর্টিকেলের মাধ্যমে খুব কম খরচে কয়েক ধরনের উপাদান ব্যবহার করে রেগুলার ফেসিয়ালের সম্পূর্ণ প্রক্রিয়া বলে দিবো। আজকের ফেসিয়ালের রেসিপিগুলো সব বয়সে সব ধরনের ত্বকের জন্যই উপকারী। যারা সবে মাত্র ২০ এ পা রেখেছেন বা ২০ + হয়েছে তারা হয়ত ত্বকের বিভিন্ন সমস্যা মোকাবেলা করছেন কিন্তু বুঝতে পারছেন না কোন ফেসিয়াল করবেন বা কীভাবে ত্বকের যত্ন নিবেন। তাদের জন্যও এই রেসিপিগুলো প্রযোজ্য। এই ফেসিয়ালের কোন পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া নেই, যদিনা কোন নির্দিষ্ট উপাদানের প্রতি আপনি সংবেদনশীল হয়ে থাকেন।

 

হানি ফেসিয়ালঃ

প্রথমে ফেসওয়াশ আর স্ক্রাবার দিয়ে মুখ পরিষ্কার করে তারপর ভালো মানের মাস্যাজ ক্রিম দিয়ে হালকা হাতে মাস্যাজ করুন ১০ মিনিট। এরপর একটি গামলাতে গরম পানি নিয়ে মুখে গরম ভাপ নিন। এতে করে আপনার মুখে লোমকূপ গুলো খুলে যাবে। এবার ব্ল্যাকহেডস বা হোয়াটহেডস থাকলে তা এক্সট্রাকটর দিয়ে পরিষ্কার করুন। এখন নীচের প্যাকটি লাগান।

যা যা লাগবে

১ টেবিল চামচ মধু,

একটি ডিমের কুসুম,

১ চা চামচ অলিভ অয়েল।

প্রণালীঃ

ডিমের কুসুম ভালো ভাবে ফেটিয়ে নিন। তেল মিশান আবার ভালো ভাবে ফেটান। এবার অন্য একটি বাটিতে মধুর সাথে গরম পানি দিয়ে আলতো হাতে মিশিয়ে নিন। এবার এই মিশ্রণটি ডিমের মিশ্রণের সাথে ফেটিয়ে নিন। সমস্ত মুখ এবং গলায় প্যাকটি লাগিয়ে ১৫ মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন। সব শেষে মুখে এক টুকরো বরফ ঘষে নিন। এতে খোলা পোর গুলো বন্ধ হয়ে যাবে। কী?? আয়নায় নিজেকে দেখে অবাক হচ্ছেন তো?? গত মাসে এত গুলো টাকা খরচ করে পার্লার থেকে ফেসিয়াল করে যেমনটি দেখাচ্ছিল ঠিক তেমনটিই লাগছে, তাই না? যেহেতু এই ফেসিয়ালে গরম ভাপ দিয়ে স্ক্রাব করে, ত্বক উপযোগী মাস্ক লাগিয়ে মুখের ময়লা পরিষ্কার করা হয় তাই মাসে ২ বার করলে কোন ধরনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হবে না।

এলোভেরা ফেসিয়ালঃ

জানা কথা এলোভেরা ফেসিয়ালে এলোভেরা জেল ব্যবহার হবে। তবে তার আগে জেনে নিন এলোভেরাতে আপনার অ্যালার্জি নেই তো? এলোভেরা জেলে অক্সিন আর গিবেরেলিন্স নামের ২ টি হরমোন আছে। এই ২টি হরমোন ব্রণের সমস্যা দূর করে, সানবার্ন সারিয়ে দেয়, সেই সঙ্গে বয়সের ছাপও চটপট লুকিয়ে ফেলে। শুষ্ক, তৈলাক্ত বা মিশ্র ত্বকের অধিকারীরা অনায়াসে এই ফেসিয়াল করাতে পারেন।

ফেসওয়াশ বা ক্লিনজিং মিল্ক দিয়ে প্রথমে মুখটি পরিষ্কার করে নিন। স্ক্রাবার দিয়ে ত্বকের সব মরা কোষ তুলে ফেলুন। তারপর ব্র্যান্ডেড কোন মাস্যাজ ক্রিম দিয়ে মাস্যাজ করুন ১০-১৫ মিনিট। এবার এলোভেরা দিয়ে একটি প্যাক বানান। একটি শশার খোসা ছড়িয়ে নিয়ে ব্লেন্ডারে ব্লেন্ড করে নিন। এরপর ৬ টেবিল চামচ শশার সাথে ৪ টেবিল চামচ এলোভেরা জেল নিন। এর সাথে ২ টেবিল চামচ প্লেন দই মিশিয়ে নিন। চোখের চারপাশ বাদে পুরো মুখে প্যাকটি লাগিয়ে ২০ মিনিট রাখুন। তারপর হালকা গরম পানি দিয়ে মুখটি ধুয়ে ফেলুন।

কিউকাম্বার ফেসিয়ালঃ

প্রথমে ফেসওয়াশ আর স্ক্রাবার দিয়ে মুখ পরিষ্কার করে নিন। তারপর ভালো মানের মাস্যাজ ক্রিম দিয়ে হালকা হাতে মাস্যাজ করুন ১০ মিনিট। এখন নীচের প্যাক টি লাগান।

যা যা লাগবে – ১টি শশা,

হাফ চা চামচ লেবুর রস,

ডিমের সাদা অংশ ফেটিয়ে ফোম করে নেয়া।

প্রণালীঃ শশার খোসা তুলে ফেলুন। তারপর শশাটি ব্লেন্ডারে ব্লেন্ড করে নিন। তারপর শশার রসের সাথে লেবুর রস মিশিয়ে ডিমের ফোমটা আলতো হাতে শশার প্যাকের সাথে মেশান। তারপর মুখে গলায় লাগিয়ে ১৫-২০ মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন। হয়ে গেল স্বল্প খরচে আপনার কিউকাম্বার ফেসিয়াল। মাসে ২ বার এটা করতে হবে অনুজ্জ্বল, রোদে পোড়া ভাব কমানোর জন্য। তবে যাদের ব্রণ আছে তারা এই ফেসিয়ালে তেমন কোন উপকার পাবেন না।

সর্বোপরি রুটিন মাফিক জীবন যাপন আর পুষ্টিকর খাবার সাস্থ্যজ্জ্বল ত্বকের গোপন রহস্য। ধুমপান, অ্যালকোহল ত্যাগ করুন দেখবেন এমনিতেই আপনার চেহারা ঝলমল করছে। তবে, এটা সত্যি যে একটি বয়সের পর ত্বক তার মাধুর্য হারিয়ে রুক্ষ শুষ্ক মলিন হয়ে ওঠে তাই এর নিয়মিত যত্ন দরকার। আশা করছি আমার এই সামান্য চেষ্টা আপনাদের উপকারে আসবে। সবার জন্য শুভ কামনা।

Leave a Reply