পিসি গেমস রিভিউ & Assassin’s Creed IV Black flag

41518.png
পিসি গেমস রিভিউ & Assassin’s Creed IV Black flag

 

Assassin’s Creed IV Black flag গেমটা খুব ভালো লেগেছে খেলে। গেমটা আগের অন্যান্য Assassin’s creed গেমস গুলোর মতো নয়।তবে গেমে সিরিজের আগের গেম গুলোর মতোই এসাসিনদের সাথে টেমপলারদের যুদ্ধ হয়। গেমে গেমারকে এডওয়ার্ড কেনওয়ে নামে এক নাবিককে নিয়ে খেলা শুরু করতে হবে,যে প্রচুর টাকা আয় করতে চায় এবং এজন্য সে তার গার্লফেন্ড ক্যারোলিনা কে ছেড়ে জাহাজের নাবিক হিসেবে যোগদান করে।গেমের শুরুতে গেমার কে একজন এসাসিনকে মেরে তার পোশাকটা নিতে হয়। এভাবে গেমের শুরুটা বেশ ভালো হয়েছে ।

হাভনায় যাওয়ার পর গেমার কে কয়েকজন টেমপলারদের সাথে দেখা করতে হয় এবং তাদের সাথে কাজ করতে হয়। গেমে গেমারকে ওয়েষ্ট ইনডিজে খেলতে হয়।

গেমার গেমে জ্যাকড নামে একটি জাহাজ পাবে,যেটি আপগ্রেট করে আরো শক্তিশালি করতে হয়।

গেমে নাসাউ নামে পাইরেটদের একটি জায়গা থাকে। এখানে আরো অনেক পাইরেটের সাথে দেখা হয়। এর পর থেকে পাইরেটদের সাথে বিভিন্ন মিশন খেলতে হয়। জ্যাকড অর্থাৎ জাহাজটা নিয়ে বিভিন্ন ফ্রন্ট দখল করতে হবে। ডাইভিংবেল নিয়ে সাগরের নিচে হাঙরের কাছ থেকে পালিয়ে থেকে ব্লুপ্রিন্ট সংগ্রহ করার চেষ্টা করতে হবে , বিভিন্ন দীপে বিভিন্ন প্রাণি মেরে স্কিন সংগ্রহ করা, সাগরে হাঙর, তিমি হারপুন দিয়ে মারা ইত্যাদি মিলে গেমটা আসলেই অনেক সুন্দর হয়েছে। গেমে ট্রেজার ম্যাপের সাহায্যে ট্রেজার ও ব্লুপ্রিন্ট যোগার করে জাহাজ আপডেট করতে হয়, এছাড়া বিভিন্ন প্রাণির স্কিন ও bone দিয়ে গেমার প্লেয়ারের আরমর আপডেটের মাধ্যমে লাইফ বাড়াতে পারবে, বন্দুকের holster বাড়াতে পারবে। গেমে বেশ কিছু সুন্দর পোশাক ও আছে,তাছাড়া ৫ টা টেমপলার key যোগার করে একটা টেমপলার ড্রেস পাওয়া যায় এবং ১৬টা মায়ান ট্রেজার পাওয়ার পর একটা মায়ান ড্রেস এসাসিনদের এলাকা থেকে পাওয়া যায়।

গেমের গ্রাফিক্স অসাধারন হয়েছে,আর ইফেক্ট গুলো ও খুব সুন্দর হয়েছে। যখন জাহাজ নিয়ে বিভিন্ন স্থানে যাওয়া সময় আসে-পাশের জায়গা গুলো খুব ভালো লাগবে , মনে হবে আপনি গেমের জগতটাতে চলে গেছেন। গেমের সাউন্ড ইফেক্ট এতো সুন্দর হয়েছে যে সারা দিনই খালি শুনতে ইচ্ছা করবে, জাহাজের ক্রুরা ও গান গাবে আগের কালের সেইলরদের মতো। গেমের জঙ্গল এলাকা গুলো এতো সুন্দর হয়েছে যে মনে হবে যে একদম অরিজিনাল। পানির ইফেক্ট,গাছের ইফেক্ট,সূর্যের আলোর ইফেক্ট গুলো আসাধারন হয়েছে। গেমে সমুদ্রে মাঝে মাঝে ঝড় হয়,ঝড়ের সময় ঠিক মতো জাহাজ চালাতে না পারলে জাহাজের লাইফ যাবে ও ক্রু হারাতে হবে।মূল কথা বলা যায় Nvidia রা গেমটাতে হেবি গ্রাফিক্স দিয়েছে।

এবার আসা যাক ওয়েপনের ব্যাপারে। গেমে আগের মতোই এসাসিনব্লেড আছে,এছাড়া এবার প্রথম বারের মতো গেমে ডাবল তলোয়ার ও ৪টা পিস্তল ব্যবহার যুক্ত হয়েছে।গেমে অনেক ধরনের তলোয়ার আছে , কোনটার স্পিড বেশী , কোনটার ড্যামেজ বেশী অথবা স্টান বেশী। বেশী ভাগ তলোয়ার কিনতে হয় তবে কিছু তলোয়ার চ্যালেঞ্জ কমপ্লিট করে আনলক করতে হয় এবং একটি মাত্র তলোয়ার আছে যেটা আনলক করতে uplay অর্থাৎ ইন্টারনেট লাগবে (এটা করতে হলে অরিজিনাল রেজিস্টারর্ড ভার্সন লাগবে)।

আর দুইটা বাদে সব কয়টা পিস্তল কিনতে পারবেন, বাকি দুইটা চ্যালেঞ্জ কমপ্লিট করে আনলক করতে হবে। কিন্তু সবচেয়ে ভালো গোল্ডেন ফ্লিন্ট পিস্তলটা। গেমে আগের কালের আফ্রিকানরা ব্যবহার করতো এমন একটি ডার্ট থ্রোয়ার আছে , এবং এসাসিন ক্রিড থ্রির রোপিং সিস্টেম আছে যা দিয়ে এনিমিকে কাছে টেনে আনা যায়, গাছের ডালের সাথে ঝুলিয়ে ফাঁসি দেওয়া যায়।

এবার জাহাজ। গেমে যে জাহাজ নিয়ে খেলতে হবে সেটার নাম JACKDOW। জাহাজের হুইল, পাল এবং জাহাজের সামনে লাগানোর জন্য বিভিন্ন ভাসকরজো গেমার ইচ্ছা মতো চেঞ্জ করতে পারবে। গেমার তার জাহাজ দিয়ে অন্য জাহাজের সাথে ফাইট করে ৫ ধরনের জিনিস পাবে-sugar,rum,wood,cloth & metal।এর মধ্যে sugar & rum টাকার জন্য বিক্রি করতে হবে আর বাকি তিনটা জিনিষ জাহাজ আপডেট করতে লাগবে। জাহাজ নরমাললি বেশ কিছু আপডেট করা যায়,বাকি গুলো ট্রেজার ম্যাপের সাহায্যে ব্লুপ্রিণ্ট যোগার করে তার পর করতে হবে। জাহাজ আপডেট করলে আরমর বৃদ্ধি পাবে,জাহাজে মর্টার লাগাননো যাবে যা দিয়ে দূরের জাহাজে ফায়ার করা যাবে, হেভী শর্ট মারা যাবে, হারপুনিং করা যাবে। আর ম্যাপে ৪টা লেজেনডারী শীপ পাওয়া যাবে , যে গুলো মারতে হলে জাহাজ সম্পূর্ন আপডেট করে নিতে হবে না হলে বার বার ব্যার্থ হতে হবে আর এই শীপ গুলোর সবচেয়ে weak পয়েন্ট হচ্ছে পিছনের দিকটা, তাই পিছনে সঠিক ভাবে ফায়ার করলেই শীপ গুলো ডিসট্রয় করা যাবে।

গেমে টেমপলাররা অবজারভেটরি খোজ করে, ঐ স্থানে এমন একটি জিনিষ আছে যার সাহায্যে পৃথিবীতে যেকারো অবস্থান জানা সম্ভব যদি নিদিষ্ট এক ধরনের কাঁচের বাক্সে তার এক ফোটা রক্ত যোগার করে রাখা যায়। কিন্তু এডওয়ার্ড কেনওয়ে ও ঐ জিনিসটি পেতে চায়, কারন এটি পৃথিবীর সবচেয়ে দামি জিনিস এবং এসাসিনরা টেমপলারদের থামতে চায়। এটানিয়েই গেমের কাহিনি তৈরি।

গেমের শেষের দিকে গেমারের অনেক পাইরেট বন্ধু মারা যায়,এর মধ্যে Blackbeard,James Kidd(আসল নাম Mary) এর মৃত্যুর সময়টা স্মরনীয়। গেমের ক্রেডিসসের সময় এডওয়ার্ড কেনওয়ের ছোট্ট সুন্দর কৌতুহলি এবং বুদ্ধিমান মেয়েকে দেখা যাবে (যে গুন গুলো বলাম তা ক্রেডিসসের সময়ের সব কথা মনোযোগ দিয়ে শুনলে বুঝতে পারবেন)।

গেমে কেনওয়ে আসলে কোন এসাসিন থাকেনা, সে তার skill গুলো জিনেটিক ভাবে পেয়েছে, যেমন:Eagle vision. সবচেয়ে মজার বিষয় হচ্ছে গেমার যখন এ্যানোনিমাস কম্পিউটার থেকে বের হবে তখন তাকে ফাস্টপারসন মুডে খেলতে হবে এবং বিভিন্ন কম্পিউটার,ক্যামেরা,সারভার হ্যাক করতে হবে।সব মিলিয়ে গেমটা খুব সুন্দর হয়েছে,আমার খেলে খুব ভালো লেগেছে আশা করি সকলের কাছেই গেমটা বেশ ভালো লাগবে।

Leave a Reply