ফল বা সবজি খোসাই খাসা খানা:
চাষবাসের ক্ষেত্রে যেভাবে আজকাল যথেচ্ছ কীটনাশক ব্যবহার করা হয়, তাতে ফল বা সবজির গায়ে লেগে থাকে নানা জীবাণু। তাই সেগুলো খাওয়ার আগে খোসাটা মোটা করে কেটে নিলেই এড়ানো যাবে রোগবালাই। এটাই ধারণা বেশিরভাগ মানুষের। কিন্তু, জানেন কি? এমন কিছু ফল ও সবজি রয়েছে, যেগুলোর আসল গুণ লুকিয়ে রয়েছে তার খোসাতেই। কাজেই খোসা কেটে বাদ দিয়ে দিলে, ফেলনা হয়ে যায় নানা প্রয়োজনীয় ভিটামিন ও মিনারেল। কাজেই জেনে নিন, কোন কোন ফল বা সবজি খোসা-সহই খাবেন।
আপেল
বেশিরভাগ লোকই আপেল খোসা-সহ খেতে পছন্দ করেন। তবে খুঁতখুঁতে অনেকে আবার আপেল খাওয়ার আগেও সযত্নে সেটির খোসা ছাড়িয়ে নেন। কিন্তু, জানেন কি, গোটা একটা আপেলের থেকে প্রায় ২ থেকে ৩ গুণ বেশি পুষ্টি ও ফাইবার থাকে আপেলের খোসাটিতে। এছাড়াও আপেলের খোসায় রয়েছে এসিই এনজাইম, যা উচ্চ রক্তচাপ কমানোয় বিশেষ সহায়ক।
তরমুজ
অনেকে ভাবছেন, তরমুজের এতো শক্ত খোসা আবার কি করে খাবেন? না, তরমুজের একেবারের বাইরের সবুজ খোসা নয়, সেটি কাটলে লাল তরমুজের গায়ে সাদা রঙের যে অংশটি থাকে, সেটিকেও অনেকে কেটে বাদ দিয়ে দেন। কিন্তু, তারা জানেন না, তরমুজের ওই সাদা অংশেই থাকে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি, বি৬ ও সিট্রুলিন নামে অ্যামিনো অ্যাসিড, যা রক্ত সঞ্চালন স্বাভাবিক রাখতে বিশেষ উপকারী।
লেবু
ঘরে ঘরে লেবু জুস করে খাওয়ার একটা প্রবণতা রয়েছে। কমলা হোক বা মুসম্বির রসই খেতে বেশি পছন্দ করে ছোট-বড় সবাই। কিন্তু জানেন কি, একটা লেবুর জুস খেয়ে যেটুকু পুষ্টি আপনার শরীরে যাচ্ছে, লেবুটির খোসাটিও যদি খেতেন, তবে পেতেন আরো অন্তত ২০ গুণ বেশি পুষ্টি। যেকোনো লেবুর ক্ষেত্রেই একই কথা প্রযোজ্য।
শশা
একটু তিতকুটে স্বাদের কারণে অনেকেই শশার খোসা ফেলে দিয়ে খেতেই স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন। কিন্তু শশার খোসায় রয়েছে প্রচুর পরিমাণে প্রাকৃতিক সিলিকা, যা ত্বক ও চুলের জন্য অত্যন্ত কার্যকরী উপাদান। কাজেই তিতকুটে ভাব কাটাতে শশার খোসাটি কেটে বাদ দিয়ে দিলে কিন্তু শশার উপকারিতার ১০০% পাওয়া থেকে নিজেকে বঞ্চিত করবেন।
আলু
হোটেল বা রেস্তোরাঁয় খেতে গিয়ে যদি দেখেন আলুর খোসা সমেতই রান্না করে দিয়ে দিয়েছে, তাহলে নিশ্চয়ই মেজাজটা গরম হয়ে যায়। কিন্তু, যদি বলি, আপনি বাড়িতেও আলু রান্না করুন খোসা সমেতই। অবাক হচ্ছেন? আসলে আলুর খোসা ছাড়িয়ে রান্না করলে আপনি অনেক পুষ্টির অপচয় করবেন। কারণ আলুর খোসায় রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার, পটাশিয়াম, ভিটামিন কে, কপার ও আয়রন, যা আমাদের শরীরের জন্য বিশেষ উপকারী। তাই আলু খোসা না ছাড়িয়ে খাওয়াই ভালো।
গাজর
একই কথা প্রযোজ্য গাজরের ক্ষেত্রেও। গাজরও খাওয়া উচিত খোসা-সহ। গাজরের খোসাতেই লুকিয়ে থাকে অনেক অনেক পুষ্টিকর উপাদান। যা আমাদের চোখ, ত্বক, কোলনের সুরক্ষা করে। তাই গাজরটি খাওয়ার আগে ভালো করে ধুয়ে নিন, কিন্তু খোসা ফেলে দেবেন না।