রসুনের অনেক গুণ
রান্নার উপকরণ হিসেবে রসুনের ব্যবহার প্রাচীন কাল থেকেই। রান্নার উপকরণের পাশাপাশি রোগ নিরাময়ে জুড়ি নেই রসুনের।
চিকিৎসকদের দাবি, রসুনে রয়েছে সালফার, অ্যালিসিসের মত এমন কিছু উপাদান যা ক্যান্সার নিরাময়ে সহায়তা করে।
দিল্লির পুষ্টি বিশেষজ্ঞ ডা. সিমরান সাইনি বলেন, রসুনে উচ্চ পরিমাণ সালফার থাকায় এটিকে অ্যান্টিবায়োটিকের মর্যাদা দেয়া হয়। এটি হজম প্রক্রিয়ায় সময় টক্সিক বের করে দেয়। পাশাপাশি এটি ধমনি পরিষ্কার করে। ঠাণ্ডাজনিত সমস্যা ও হৃদপিণ্ডের রোগ সারাতে কার্যকর ভূমিকা রাখে রসুন। এছাড়াও চর্মের রোগ নিরাময়ে উপকারী রসুনে অ্যান্টিবায়োটিক ছাড়াও রয়েছে অ্যান্টিসেপটিক, অ্যান্টি-ফাংগাল ও অ্যান্টি-ভাইরাল; যা বিভিন্ন রোগবালাই থেকে দূরে রাখে।
তবে তার মতে, রসুন খেতে হলে কাঁচা চিবিয়ে খেতে হবে। চিবিয়ে না খেলে রসুনের রাসায়নিক উপাদান এলিসিন নির্গত হবে না। অবশ্য রসুন খাওয়ার এক বিশেষ পদ্ধতির কথা বলেছেন তিনি। এক কোয়া কাঁচা রসুন দুই দাঁতের মাঝখানে রেখে হালকা কামড় দিয়ে এর রস বের করে পানি দিয়ে পুরোটা খেতে বলেছেন তিনি।
রোগ প্রতিরোধে রসুনের কয়েকটি ব্যবহার
রক্ত পরিষ্কারে রসুন
রক্ত পরিষ্কারে একসঙ্গে দুই কোয়া কাঁচা রসুন গরম জলের সঙ্গে মিশিয়ে দিনে তিন থেকে চারবার চিবিয়ে খেতে হবে। রক্তের চাপ ও রক্তের কোলেস্টেরলের মাত্রা কমানোর জন্য এটি কার্যকর। এতে রয়েছে শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট জাতীয় উপাদান।
ঠাণ্ডাজনিত সমস্যায়
ঠাণ্ডা লাগা, গলা বসে যাওয়া কিংবা গলাব্যথা, মাথাব্যথা, গেঁটে বাত, হাঁপানি ও ব্রংকাইটিসের সমস্যায় প্রতিদিন দুই থেকে তিন কোয়া কাঁচা রসুন চিবিয়ে খেলে সহজেই আরোগ্য লাভ করা যায়।
হৃদরোগ প্রতিরোধে
হৃদরোগ প্রতিরোধে খুবই কার্যকর রসুন। নিয়মিত রসুন উচ্চ রক্তচাপ ও কোলেস্টরের মাত্রা কমাতে সাহায্য করে।
রোগ প্রতিরোধক ও প্রতিষেধক
দীর্ঘ দিন ধরে অ্যান্টিবায়োটিক হিসেবে রসুনের ব্যবহার চলে আসছে। গবেষণায় দেখা যায়, রসুন শিশুদের কৃমিরোগ প্রতিরোধ করে। শুধু তাই নয়, চর্মরোগ প্রতিরোধক ও প্রতিষেধক হিসেবে কাজ করে রসুন।
ক্যান্সার প্রতিরোধে
অনেক গবেষণায় দেখা গেছে, পাকস্থলী, স্তন, প্রোস্টেট, মূত্রথলি ও ফুসফুসের ক্যান্সার প্রতিরোধে রসুন বেশ উপকারী।
চর্ম ও চুলের রোগে
চর্মের বিভিন্ন রোগে দীর্ঘদিন ধরে রসুন ব্যবহার হয়ে আসছে। চর্মে সংক্রমণ ঠেকাতে রসুন অত্যন্ত উপকারী। এছাড়া চুল পড়া রোধে রসুনের নির্যাসের ব্যবহার রয়েছে।
সতর্কতা:
১) চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া দিনে ২-৩ কোয়ার বেশি কাঁচা রসুন খাওয়া ঠিক নয়।
২) অ্যাজমা আক্রান্তদের রসুন না খাওয়াই ভালো।
৩) অস্ত্রোপচারের আগে রসুন খাওয়া উচিত নয়।