অডিও এডিটিং এমন এক ধরনের কমপিউটিং, যা অডিও নিয়ে পুরোপুরি প্রফেশনাল না হলে সবসময় কাজে লাগে না। তবে মাঝে মাঝে এত বেশি প্রয়োজনীয় হয়ে ওঠে যে, অডিও নিয়ে যারা নিয়মিত কাজ করেন তাদের কাছে ছুটে যাবার প্রয়োজন হয়ে পড়ে। অনেকের অভিযোগ লিনআক্সে গান শোনা বা ভিডিও দেখা নিয়ে অনেক সমস্যা হয়। মিডিয়াসংশিষ্ট বিভিন্ন সমস্যা থেকে কিভাবে মুক্তি পাওয়া যায়, কোডেক সমস্যার সমাধান ইতোমধ্যে এই পত্রিকার মাধ্যমে দেয়া হয়েছে। লিনআক্সের সবচেয়ে বড় সুবিধা হচ্ছে, এই অপারেটিং সিস্টেম ইনস্টল করার সময় বিভিন্ন অ্যাপিকেশন সফটওয়্যার আলাদাভাবে ইনস্টল করার প্রয়োজন হয় না। অপারেটিং সিস্টেম ইনস্টল করার সময় স্বয়ংক্রিয়ভাবে অ্যাপিকেশন সফটওয়্যার ইনস্টল হয়ে যায়।
লিনআক্স যারা নতুন চালাচ্ছেন, তাদের অনেক অভিযোগ থাকে বিভিন্ন অ্যাপিকেশন সফটওয়্যার নিয়ে। কারণ, উইন্ডোজে চলে এমন অনেক সফটওয়্যার আছে যেগুলোর লিনআক্স ভার্সন নেই। তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে বিকল্প সফটওয়্যার আছে, যাতে করে লিনআক্স কমপিউটিংয়ে সমস্যা না হয়। তাই নবীনদের কিছুটা সমস্যা হলেও যারা নিয়মিত লিনআক্স ব্যবহার করেন, তাদের সমস্যা হয় না। অনেক সময় দেখা যায়, ভয়েস রেকর্ড করার পর বা মোবাইল ফোনের রিংটোন একটু পরিবর্তন করার জন্য অডিও এডিটের প্রয়োজন হয়। উইন্ডোজ অপারেটিং সিস্টেমে প্রচুর অডিও এডিটিং সফটওয়্যার আছে। এগুলো ব্যবহার করাও খুব সহজ। এর মধ্যে অ্যাডোবি অডিশন, সনির সাউন্ডফোর্জ, নিরো ওয়েভ এডিটর, সোর্সফোর্জ অডাসিটি ইত্যাদি বেশ জনপ্রিয়। কিন্তু যারা লিনআক্স ব্যবহার করেন, তাদের জন্য যে অডিও এডিটিং সফটওয়্যারগুলো দেয়া আছে, তা খুব একটা কাজের নয়।
সোর্সফোর্জ অডিসিটি এখন মাল্টিপল অপারেটিং সিস্টেম সাপোর্ট করে। এই সফটওয়্যার এখন উইন্ডোজের পাশাপাশি সোর্স কোডসহ ম্যাক এবং লিনআক্সেও চলবে। আগেই বলা হয়েছে, অডিও এডিটিংয়ের জন্য সোর্সফোর্জ অডাসিটি বেশ জনপ্রিয় সফটওয়্যার। যেসব লিনআক্সে এই সফটওয়্যার চলবে সেগুলো হচ্ছে : ডেবিয়ান, ফেডোরা, ম্যান্ড্রিভা, সুসে, রেডহ্যাট, ওপেন সুসে এবং উবুন্টু লিনআক্স। পাশাপাশি এর সিস্টেম রিকোয়ারমেন্ট হচ্ছে কমপক্ষে ৬৪ মেগাবাইট র্যা ম ও কমপক্ষে ৩০০ মেগাহার্টজ প্রসেসর। সমসাময়িক সিস্টেমগুলোর মধ্যে বেশিরভাগেরই এই ন্যূনতম কনফিগারেশনের চেয়ে শক্তিশালী সিস্টেম ব্যবহার করেন সবাই। তবে এই কনফিগারেশন সোর্সফোর্জ অডাসিটি চলার জন্য যথেষ্ট। তবে এর চেয়ে বেশি শক্তিশালী সিস্টেম এই সফটওয়্যার চালাতে সুবিধা হবে।
সোর্সফোর্জ অডাসিটি ওপেন সোর্সভিত্তিক সফটওয়্যার। ভালো প্রোগ্রামার হলে নিজে নিজেই এর উন্নয়ন করা সম্ভব হবে এবং তা উইন্ডোজ বা ম্যাকে বসেও করা সম্ভব। তবে লিনআক্স, উইন্ডোজ বা ম্যাকের ভার্সন কিন্তু এক নয়। এগুলো আলাদা আলাদা। তাই এদের সোর্স কোডও আলাদা আলাদা হবে সেটাই স্বাভাবিক। তবে আলাদা আলাদা পvটফর্মেও একই ভার্সনের সোর্সফোর্জ অডিসিটির ব্যবহার এবং প্রয়োগ এক। ইন্টারনেট কনফিগারের সাথে সোর্সফোর্জ অডাসিটির কোনো সম্পর্ক নেই। আগে ইন্টারনেট কনফিগার করে তবেই সোর্সফোর্জ অডাসিটি চালাতে হবে। ফলে সফটওয়্যার হালনাগাদ নিয়ে কোনো ঝামেলায় পড়তে হবে না। কিভাবে ইন্টারনেট কনফিগার করবেন তা এর আগে কয়েক সংখ্যায় বলা হয়েছে। যদি ম্যাক স্পুফিং (ল্যানের ম্যাক ব্যবহার না করে অন্য ম্যাক ব্যবহার করতে চাইলে) করতে চান, তাহলে আগে ম্যাক স্পুফিং করে তারপর আইপি অ্যাড্রেস দিতে হবে। প্রথমেই জেনে নিতে হবে আপনার আইপি অ্যাড্রেস কত, সার্ভারের ডিফল্ট গেটওয়ে কত, ডিএনএস সার্ভারের আইপি অ্যাড্রেস কত এবং আপনার পোর্ট কত। আর যদি আপনার আইএসপি উইনস সার্ভারের আইপি ব্যবহার করেন, তাহলে সেটিও আপনাকে জেনে নিতে হবে। প্রয়োজনীয় এসব ডাটা সংগ্রহ করা হয়ে গেলে প্রথমেই দেখে নিতে হবে সিস্টেম ট্রেতে আপনার নিকের (নেটওয়ার্ক ইন্টারফেস কার্ড বা ল্যান কার্ড) আপলিঙ্ক এবং ডাউনলিঙ্ক আইকন দেখাচ্ছে কি না। নিকের আইকনের ওপর রাইট বাটন ক্লিক করে প্রথমে ল্যান ডিজ্যাবল করে নিতে হবে। তারপরে সঠিকভাবে এসব ডাটা ইনপুট দিতে হবে।
মনে রাখতে হবে, যদি একাধিক ইন্টারনেট ব্রাউজার ব্যবহার করা হয়, তাহলে আগে ইন্টারনেট সেটআপ করে তারপর ব্রাউজার ইনস্টল করাই ভালো। আর আমরা যারা একই ইন্টারনেট লাইন একাধিক সিস্টেমে ব্যবহার করি, তাদের ম্যাক অ্যাড্রেস বার বার পরিবর্তন করতে হয়। সাধারণত সিস্টেমে একাধিক ল্যান না থাকলে নিক কনফিগার করতে তেমন কোনো সমস্যা হয় না। তবে এখনকার অনেক সিস্টেমে ওয়্যারলেস ল্যান থাকে। ওয়ারলেস ল্যানেও একইভাবে নেটওয়ার্ক কনফিগার করতে হবে। ইন্টারনেট কনফিগার করার উপায় ইতোপূর্বে দেখানো হয়েছে। অনেকেই কনফিগার করতে পারেননি শুধু সিস্টেমে একাধিক ল্যান থাকার কারণে বা আইএসপির অটোমেটিক আইপি ব্যবহার করার ফলে। আইএসপি যদি অটোমেটিক আইপি ব্যবহার করেন, তাহলে সিস্টেমের জন্য DHCP সার্ভার সিলেক্ট করে দিতে হবে। ল্যান ডিজ্যাবল করা হয়ে গেলে নেটওয়ার্ক টুলস চালু করতে হবে।
আইপি ইনফরমেশন থেকে আইপিভি সিলেক্ট করে কনফিগার বাটনে ক্লিক করে নিক কনফিগার করতে হবে। ইদানীং অনেক আইএসপি এমনভাবে ইন্টারনেট সেটআপ করে যেখানে কোনো আইপি অ্যাড্রেস দেবার প্রয়োজন পড়ে না। ডায়ালআপ সার্ভিসের মতো শুধু ইউজার নেম এবং পাসওয়ার্ড দিলেই ইন্টারনেট কনফিগার হয়ে যায়। এধরনের সার্ভিস দেয়া হয় DHCP সার্ভারের মাধ্যমে।
এধরনের ইন্টারনেট কনফিগার করতে হলে সার্ভার টাইপ DHCP সিলেক্ট করলেই সিস্টেম নিজে নিজেই আইপি অ্যাড্রেস ছাড়াই ইন্টারনেটে যুক্ত হবে। ইদানীং ঢাকার অনেকেই স্মাইল আইএসপি থেকে ইন্টারনেট কানেকশন নিচ্ছেন। স্মাইল থেকে অনেকেই ইন্টারনেট সেটআপ করতে পারেননি শুধু DHCP কানেকশন সিলেক্ট না করার কারণে। এ ধরনের কানেকশনে কোনো আইপি অ্যাড্রেস দেবার প্রয়োজন পড়ে না।