২০১৫ সালে বিশ্বব্যাপী ট্যাবলেট ডিভাইস ব্যবহার করবে ১০০ কোটি মানুষ

২০১৫ সালে বিশ্বব্যাপী ট্যাবলেট ডিভাইস ব্যবহারকারীর সংখ্যা শতকোটি ছাড়াবে। এর এক-তৃতীয়াংশ হবে চীনা ব্যবহারকারী। সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদনে এমনটাই দাবি করে গবেষণা প্রতিষ্ঠান ই-মার্কেটার। তবে আগামী বছরগুলোয় এ ডিভাইস ব্যবহারের প্রবৃদ্ধি হ্রাস পাবে বলেও জানানো হয়। খবর গার্ডিয়ান।

প্রতিবেদনে ই-মার্কেটার জানায়, চলতি বছর বিশ্বের ১৫ শতাংশ মানুষ অন্তত এক মাস ট্যাবলেট ডিভাইস ব্যবহার করবে। কিন্তু প্রতি বছর নতুন ট্যাবলেট ডিভাইস ব্যবহারকারী বৃদ্ধির হার কমছে। ২০১৩ সালে নতুন ট্যাবলেট ডিভাইস ব্যবহার বেড়েছিল ৫৪ দশমিক ১ শতাংশ। ২০১৪তে এ হার ২৯ দশমিক ১ শতাংশে নেমে আসে। চলতি বছর নতুন ট্যাবলেট ডিভাইস ব্যবহারের হার আগের বছরের তুলনায় বাড়বে ১৭ দশমিক ১ শতাংশ।

চলতি বছর সমগ্র বিশ্বে সবচেয়ে বেশি ট্যাবলেট ডিভাইস ব্যবহার করবে চীনা গ্রাহকরা। দেশটিতে এ বছর ট্যাবলেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা দাঁড়াবে ৩২ কোটি ৮৩ লাখে। চীনের পরে রয়েছে যথাক্রমে যুক্তরাষ্ট্র, ভারত ও যুক্তরাজ্য। যুক্তরাষ্ট্রে ব্যবহারকারীর সংখ্যা দাঁড়াবে ১৫ কোটি ৬০ লাখে। ভারত ও যুক্তরাজ্যে এ সংখ্যা দাঁড়াবে যথাক্রমে ৪ কোটি ৪ লাখ ও ৩ কোটি ২২ লাখে।

চলতি বছরও বিক্রি হতে যাচ্ছে বিপুল সংখ্যক ট্যাবলেট ডিভাইস। কিন্তু সময়ের সঙ্গে এ ডিভাইস বিক্রি হ্রাস পাওয়ায় অনেক প্রতিষ্ঠানই ট্যাবলেটের ওপর থেকে মনোনিবেশ সরিয়ে নিয়েছে। ট্যাবলেট বিক্রি হ্রাসের বেশকিছু কারণ উল্লেখ করেছে ই-মার্কেটার। এখনো অনেকে মনে করেন ট্যাবলেট হচ্ছে একটি বিলাসবহুল পণ্য। এর মূল কারণ হচ্ছে বাজারে যে হারে স্মার্টফোন ও ফ্যাবলেটের দাম কমছে, ট্যাবলেটের দাম সে হারে কমছে না। আর ফ্যাবলেট নামে অধিক পরিচিত বড় পর্দার স্মার্টফোন ট্যাবলেটের বাজার হ্রাস করছে।

বাজারে আসার পর গ্রাহকরা ট্যাবলেটের দিকে ঝুঁকেছিলেন মূলত বড় পর্দার কারণে। কিন্তু স্মার্টফোনের চেয়ে বড় পর্দা ও ট্যাবলেটের চেয়ে ছোট পর্দার মোবাইল ডিভাইস বাজারে আসার পর থেকে ট্যাবলেটের চাহিদা কমতে থাকে।

এদিকে বাজারে নিয়মিতই বিভিন্ন প্রযুক্তি পণ্য আসছে। এত পণ্যের ভিড়ে সাধারণ গ্রাহকরা এখন ট্যাবলেটকে খুব বেশি প্রয়োজনীয়ও মনে করছেন না। স্মার্টফোন, ফ্যাবলেট, পরিধেয় প্রযুক্তি পণ্য, ইন্টারনেট সেবা-সংবলিত টেলিভিশন, গেম কনসোলের মতো হাজারো ডিভাইস নিয়মিত বাজারে আসছে। কিন্তু এ বাজারে ট্যাবলেট এখন খুব বেশি গুরুত্ব নিয়ে অবস্থান করছে না বলে মনে করছেন বাজার বিশ্লেষকরা।

প্রযুক্তি খাতের জন্য গুরুত্বপূর্ণ জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়ার মতো বাজারেও এখন ট্যাবলেটের অবস্থান খুব বেশি ভালো না। অন্যান্য বাজারের তুলনায় এ দুটি দেশের গ্রাহকরা একটু দেরিতেই ট্যাবলেটকে স্বাগত জানিয়েছে। কিন্তু অন্যান্য দেশের মতো সংশ্লিষ্ট খাতের জন্য গুরুত্বপূর্ণ এ দুটি দেশেও নতুন ট্যাবলেট ব্যবহারকারী বৃদ্ধির হার সময়ের সঙ্গে কমছে।

গত নভেম্বরে বাজার গবেষণা প্রতিষ্ঠান ইন্টারন্যাশানল ডাটা করপোরেশনের তথ্য অনুযায়ী, গত বছর বিশ্বব্যাপী সরবরাহ হয়েছে মোট ২৩ কোটি ৫৭ লাখ ইউনিট ট্যাবলেট ডিভাইস। এর মধ্যে ৬৭ দশমিক ৭ শতাংশ পরিচালিত হচ্ছে অ্যান্ড্রয়েড অপারেটিং সিস্টেমে। ২৭ দশমিক ৫ শতাংশ চলছে অ্যাপলের আইওএস অপারেটিং সিস্টেমে। আর ৪ দশমিক ৬ শতাংশ উইন্ডোজে। এখানে উল্লেখ করার মতো বিষয় হলো পৃথকভাবে ট্যাবলেটের বাজারে অ্যাপলই এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি আগ্রহ দেখাচ্ছে। প্রতিষ্ঠানটি নিয়মিতই তাদের আইপ্যাড সিরিজের ট্যাবলেট বাজারে ছাড়ছে। তবে বাজারের অবস্থা অনুযায়ী আগামীতে চাহিদা কমে যাওয়ার কারণে অ্যাপলকেও তাদের ট্যাবলেট ডিভাইস উত্পাদন হ্রাস করতে হতে পারে বলে মনে করছেন বাজার বিশ্লেষকরা।

Leave a Reply